বগুড়ায় স্থানীয় শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকারের বিরুদ্ধে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠার ১০ দিন পরে ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর মা ও তরুণীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেয়া হয়েছে। এসময় তাদেরকে বেধড়ক মারধোর করা হয়। শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকার (২৪) এবং তার তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করে। তবে অভিযুক্তদের মধ্যে তুফানের স্ত্রী আশা এবং ও তুফান সরকারের বড় বোন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকিসহ অন্যরা পলাতক রয়েছে।

গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন, তুফানের ‘সহযোগী’ শহরের চকসুত্রাপুর কসাইপাড়া এলাকার আলী আজম দিপু (২২), কালিতলার রুপম (২২) ও খান্দার সোনারপাড়ার আতিক (২৩)।

ঘটনার পর নির্যাতনের শিকার তরুণীর মা বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় নারী নির্যাতন ও অপহরণের অভিযোগে পৃথক ধারায় দুইটি মামলা দায়ের করেন। ওই দুই মামলায় তুফান সরকার, তুফানের স্ত্রী আশা এবং ও তুফান সরকারের বড় বোন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসানসহ মোট ১০ জনকে আসামী করা হয়।

বগুড়া সদর থানার ওসি এমমাদ হোসেন মামলার বরাত দিয়ে বলেন, “এ বছর এসএসসি পাশ করা এক তরুণীকে ভাল কলেজে ভর্তির প্রলোভন দেখিয়ে ১৭ জুলাই ও পরে কয়েকবার ধর্ষণ করে তুফান। এ কাজে তাকে সহায়তা করেন তার কয়েকজন সহযোগী। বিষয়টি জানতে পেরে তুফানের স্ত্রী আশা ও তার বড় বোন বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকিসহ একদল সন্ত্রাসী শুক্রবার দুপুরে ওই কিশোরী এবং তার মাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাদের মারধর করে মাথা ন্যাড়া করে দেয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তুফান ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন জানিয়ে ওসি বলেন, এজাহারে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে কিশোরী এবং তার মাকে অপহরণ, মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযুক্তদের চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি পলাতকদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

বগুড়ায় পুলিশের গণমাধ্যম শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত তুফান সরকার ওই কিশোরীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী এবং তার মা মুন্নী বেগমকে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই তরুণী এবার শহরের একটি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেছে। তার বাবা পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। শজিমেক হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আব্দুল মান্নান জানান, কিশোরীর তার হাত-পা এবং উরুসহ শরীরের অন্তত ছয়টি স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার আঘাত ততটা গুরুতর নয়, তবে সে মানসিকভাবে খুব বিপর্যস্ত।