দেশে অবৈধভাবে মুঠোফোন আমদানির কারণে বছরে ৮০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। মুঠোফোনের অবৈধ আমদানি বন্ধে তাই এবার ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর)বা তথ্যভান্ডার চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি। এতে বৈধভাবে আমদানি হওয়া সব মুঠেফোনের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। আর অবৈধভাবে আমদানি হওয়া হ্যান্ডসেট চিহ্নিত করে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের হিসাবে বর্তমানে প্রতি চারটির মধ্যে একটি মুঠোফোন অবৈধভাবে আমদানি হয়। বিটিআরসির হিসাবে স্মার্টফোন ও সাধারণ ফোন মিলে ২০১৬ সালে ৩ কোটি ১০ লাখ ইউনিট ফোনসেট আমদানি হয়েছে। আমদানি করা এসব ফোনসেটের বাজারমূল্য প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। বৈধভাবে মুঠোফোন ও বেতার যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ৮৫০-এর বেশি প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দিয়েছে বিটিআরসি। এরপরও কমছে না অবৈধ আমদানি।

বিটিআরসি বলছে, অবৈধভাবে আমদানি করা বেশির ভাগ মুঠোফোনের আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি) নম্বর নকল। প্রতিটি ফোনসেটে ১৫ অঙ্কের একটি বিশেষ নম্বর থাকে, যা আইএমইআই নম্বর নামে পরিচিত। এক হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর অন্য হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কিন্তু অবৈধভাবে আমদানি হওয়া অনেক সেটে একই আইএমইআই নম্বর ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ একটি আইএমইআই নম্বর দিয়ে অসংখ্য মুঠোফোন আমদানি হচ্ছে। এসব নকল মুঠোফোন ব্যবহারকারীকে ধরতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সমস্যায় পড়তে হয়। এনইআইআর চালু হলে সেখানে বৈধভাবে আমদানি হওয়া সব মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বর থাকবে। এর বাইরে নকল আইএমইআই নম্বরযুক্ত ফোনসেট শনাক্ত করে, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। এ জন্য এনইআইআর স্থাপনের আগে সব মুঠোফোন অপারেটরকে নিজ নিজ নেটওয়ার্কে ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (ইআইআর) নামের একটি আলাদা তথ্যভান্ডার স্থাপন করতে হবে।

জানতে চাইলে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, গ্রাহকের স্বার্থ বিবেচনা করেই এনইআইআর তথ্যভান্ডার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে অবৈধ পথে মুঠোফোন আমদানি বন্ধ হবে, পাশাপাশি গ্রাহকেরাও প্রতারণার হাত থেকে বাঁচবে। এ ছাড়া সেট হারিয়ে গেলে তা উদ্ধার করাও সম্ভব হবে।এনইআইআর চালুর জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে। এ জন্য যোগ্য প্রতিষ্ঠান নির্বাচনে উন্মুক্ত নিলামের আয়োজন করা হবে। এর আগে এ বিষয়ে নীতিমালা তৈরি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করতে বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।