বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে হিন্দু সম্প্রায়ের সর্ববৃহৎ পূজা উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে। তাইতো বন্দর নগরী চট্টগ্রামের হাটহাজরীতে চলছে দুর্গাপূজার ব্যাপক আয়োজন। এই বছর বিগত সময়ের চেয়ে এ উপজেলায় সর্বাধিক মন্ডবে পূজা অনুষ্টিত হবে জানা গেছে। অতীতের সব রের্কড ভঙ্গ করে চলতি বছরে ১শ ১১টি মন্ডপে পূজার আয়োজন চলছে। দায়িত্বশীল প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০টি পূজা মন্ডপকে অত্যাধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাছাড়া ২৪টি মন্ডপকে অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ মন্ডপ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকী ৬৭টি পূজা মন্ডপ ঝুঁিকপূর্ণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ হাটহাজারী উপজেলা শাখা ও সশ্লিষ্ট প্রশাসন সূত্রে জানা য়ায়, উপজেলার আওতাধীন ১৪টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর ১নং দক্ষিন পাহাড়তলী ওয়ার্ডে এই বছর সর্বমোট ১শ ১১টি মন্ডপে পূজা অনুষ্টিত হবে। ইতিমধ্যে এসব মন্ডেপে প্রতিমা তৈরীর কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। মন্ডপের প্যান্ডলে সাজ সজ্জার কাজ চলছে। প্রত্যেক মন্ডপের পূজা উদযাপন কমিটি মন্ডপ সাজানোর কাজ মনযোগ সহকারে তদারকি করছে। প্রায় মাসখানিক পূর্বে শব্দ যন্ত্র ও আলোক সজ্জা এবং সাজ সজ্জা অগ্রিম বায়েনা ঠিক করে রেখেছে, তবে এবার বাহিরের মাইক থেকে সাইন্ড সিষ্টেমকে প্রাধান্য দিয়েছে প্রত্যেক মন্ডপে পূজা উদযাপন কমিটি। তবে এই উপজেলায় বিগত কয়েক বছর পূর্বে চৌধুরী হাট এলাকায় ও সম্প্রতি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য অপ্রীতিকর ঘটনার কারণে স্থান বিশেষে কেউ কেউ শংকা যে বোধ করছে না তাও বলা যাচ্ছে না বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন হাটহাজারী উপজেলা শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক বাবলু দাশ। তবে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আছে বলেও তিনি দাবী করেন। অবশ্য দায়িত্বশীল প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জনপ্রতিনিধিরা এই ব্যাপারে যথেষ্ট সজাগ বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

এ বছর ১নং ফরহাদাবাদ ইউনিয়নে ৪টি মন্ডপ, ২নং ধলই ইউনিয়নে ১৪টি মন্ডপ, ৩নং মির্জাপুর ইউনিয়নে ১২টি মন্ডপ, ৪নং গুমানমর্দ্দন ইউনিয়নে ১টি মন্ডপ, ৫নং নাঙ্গলমোড়া ইউনিয়নে ১টি মন্ডপ, হাটহাজারী পৌরসভায় ৯টি মন্ডপ, ৮নং মেখল ইউনিয়নে ১১টি মন্ডপ, ১০নং উত্তর মার্দাশা ইউনিয়নে ৪টি মন্ডপ, ১১নং ফতেপুর ইউনিয়নে ৩টি মন্ডপ, ১২নং চিকনদন্ডি ইউনিয়নে ২৬টি মন্ডপ, ১৩নং দক্ষিন মার্দাশা ইউনিয়নে ৪টি মন্ডপ, ১৪নং শিকারপুর ইউনিয়নে ৭টি মন্ডপ, ১৫নং বুড়িশ্চর ইউনিয়নে ৬টি মন্ডপ ও ১নং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন দক্ষিন পাহাড়তলী ওয়ার্ডে ৯টি মন্ডপে পূজা অনুষ্টিত হবে। ৬নং ছিপাতলী ও ৯নং গড়দুয়ারা ইউনিয়নে কোন পূজা মন্ডপ নেই বলে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন হাটহাজারী উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাম্পাদক সম্পাদক রিমন মুহুরী। এসব পূজা মন্ডপের মধ্যে ফরহাদাবাদে ২টি, মির্জাপুরে ১টি, নাঙ্গলমোড়ায় ১টি, গুমানমর্দ্দনে ১টি, হাটহাজারী পৌরসভায় ২টি, মেখলে ২টি, ফতেপুরে ১টি, চিকনদন্ডিতে ৩টি, দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে ১টি, দক্ষিন মার্দাশায় ২টি, উত্তর মার্দাশায় ২টি, শিকারপুরে ১টি, বুড়িশ্চরে ১টি সহমোট ২০টি মন্ডপ অধিক ঝুকিপূর্ণ। ধলইতে ৪টি, মির্জাপুরে ২টি, হাটহাজারী পৌরসভায় ২টি, মেখলে ২টি, ফতেপুরে ১টি, চিকনদন্দিতে ৪টি, উত্তর মার্দাশায় ১টি, দক্ষিন মার্দাশায় ২টি, শিকারপুরে ২টি, বুড়িশ্চরে ২টি, দক্ষিণ পাহাড়তলীতে ২টি মোট ২৪টি পূজা মন্ডপ অপেক্ষাকৃত কম ঝুকিপূর্ণ। এছাড়া বাকী ৬৭টি পূজা মন্ডপ ঝুঁিকপূর্ণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

পূজার প্রস্তুতি তথা ঝুকিপূর্ণ মন্ডপ সর্ম্পকে হাটহাজারী উপজেলার পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি মাস্টার পরিমণ কান্তি দে এই প্রতিবেদককে জানান, শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উৎযাপনের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহন করছে কমিটি। আশাকরি যথাযগ্যে ও ভাবগম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা উৎযাপন করতে পারব। এছাড়া আমাদেরকে ঝুকিপূর্ণ মন্ডপ গুলোতে যথেষ্ট নিরাপত্তার প্রদানের আশ্বাস প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আজ (শনিবার) বিকাল ৩টায় মডেল থানায় পূজা মন্ডবের প্রতিনিধিদের সাথে আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর সভা অনুষ্ঠিত হবে।