জলবায়ু পরিবর্তনের সঠিক ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ ও সেই ক্ষয়ক্ষতির সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ আদায়ে বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জোরালো ভূমিকা রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আগামী জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ সেই ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি (লস অ্যান্ড ড্যামেজ) নিয়ে আলোচনাকালে এই আহ্বান জানান বক্তারা। খ্রিশ্চিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (সিসিডিবি) এর নির্বাহী পরিচালক জয়ন্ত অধিকারীর সঞ্চলনায় সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. আইনুন নিশাত।আলোচনায় অংশ নেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর পরিচালক (পরিবেশ ও জলবায়ু) ড. ফজলে রাব্বী সিদ্দিক আহমেদ, সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি) এর প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা, সেন্টার ফর ক্লাইমেট জাস্টিস বাংলাদেশ (সিসিজেবি) এর নির্বাহী পরিচালক হাফিজুল ইসলাম খান, জার্মানির ক্লাইমেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাডভাইস (সিডিএ) এর নির্বাহী পরিচালক থমাস হিরস, সিসিডিবি কমিশনের চেয়ারম্যান থমাস বাড়ুই, নেটওয়ার্ক অন ক্লাইমেন্ট চেঞ্জ বাংলাদেশ (এনসিসিবি) ট্রাস্টের কো-অর্ডিনেটর মিজানুর রহমান বিজয়, কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ (সিডিপি) এর নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর হাসান মাসুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মনিশংকর রায়, সিসিডিবি’র ক্লাইমেট চেঞ্জ ইউনিট প্রধান হাবিব তরিকুল প্রমুখ।

অভিযোজন প্রক্রিয়া জোরদার করার প্রতি গুরুত্বারোপ করে প্রফেসর আইনুন নিশাত বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বহু মানুষ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। অনেকে পেশা হারাচ্ছে। কোনও পদক্ষেপ গ্রহণের আগে এসব বিষয়ে ডাটাবেজ (তথ্য ভান্ডার) তৈরি করতে হবে। ” জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় গৃহীত প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।বক্তারা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সকল ক্ষতি অর্থের মাপকাঠিতে নিরূপণ যোগ্য নয়। বিশেষ করে মানুষের জীবন এবং ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ও ঐতিহাসিক নিদর্শন ধ্বংসের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করা অসম্ভব।কিন্তু ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণের সময় বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে। অতীতে কয়েকটি জলবায়ু সম্মেলনে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলেও সেখানে উত্থাপিত এ সংক্রান্ত দাবি মানা হয়নি বলে উল্লেখ করেন তারা।বক্তারা বলেন,তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সাগরের মাছ নিচে নেমে যাচ্ছে। এতে জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব জেলেদের কীভাবে ক্ষতিপুরণ দেওয়া যায়- সেটা দেখতে হবে। সবার আগে আর্থিকভাবে নিরূপণ যোগ্য নয়, এমন ক্ষয়ক্ষতি কীভাবে নির্ধারণ করা হবে সে সংক্রান্ত একটি বিধি-বিধান প্রণয়নের আহ্বান জানান তারা।