নানা শ্রেণি পেশার মানুষের শেষ শ্রদ্ধা আর ভালবাসা এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পাট্রির উপদেষ্টা, প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা ও বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ কমরেড জসিম উদ্দিন মন্ডল (৯৭)। বুধবার সকালে পাবনার ঈশ্বরদী কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। বার্ধক্যজনিত কারণে গত সোমবার (২ অক্টোবর) সকাল ৬টায় তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

বুধভার সকাল ১০টায় তার মরদেহ নেওয়া হয় পাবনার ঈশ্বরদী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে। সেখানে জসিম উদ্দিন মন্ডলের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তার স্মৃতি বিজরিত ঈশ্বরদী পশ্চিম টেংরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

পরে সকাল সাড়ে ১০টায় জানাজা নামাজের আগে জসিম মন্ডলকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করেন ঈশ্বরদী থানা পুলিশের একটি চৌকস দল। এরপর তার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন। জানাজায় ইমামতি করেন শাহসুফী মাওলানা মো. আব্দুল করিম। পরে তাকে ঈশ্বরদী কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।

পাবনার ঈশ্বরদী শহরের পশ্চিম টেংরি মুক্তির মোড় এলাকায় নিজ বাড়িতে তিনি গত কয়েক মাস ধরে অসুস্থ থাকার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এই বর্ষিয়ান রাজনীতিক।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় সিপিবি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাজনীতিক, সাংস্কৃতিককর্মী ও সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রথম জানাজা শেষে রাতে ঈশ্বরদীতে মরদেহ নিয়ে আসা হয়।

উল্লেখ্য, বৃটিশবিরোধী আন্দোলন, কৃষক আন্দোলন, তে-ভাগা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন জসিম মন্ডল। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন নিবেদিত সংগঠক। পাকিস্তান আমলে জসিম উদ্দিন মন্ডল উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন শ্রমিক এলাকায় সক্রিয়ভাবে আন্দোলন-সংগ্রামে জড়িয়ে পড়েন। কমরেড জসিম উদ্দিন মন্ডল সারাজীবন খেটে খাওয়া মানুষের জন্য রাজপথে লড়েছেন। আর গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম করতে গিয়ে প্রায় ২৩ বছর জেল খেটেছিলেন তিনি।