ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করা আবদুল ওয়াহ্‌হাব মিঞা প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা পদত্যাগ করার পর তার পদত্যাগপত্র শনিবার বঙ্গভবনে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন।

এদিন সকালে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এস কে সিনহার পদত্যাগের খবর প্রচারিত হতে থাকে। সেখানে বলা হয় সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে কানাডায় ফিরে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন তিনি।

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা মঞ্জুর করে গত ১২ অক্টোবর আইন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার অসুস্থতা ছুটি, বর্ধিত ছুটি অথবা তিনি পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত তাঁর দায়িত্ব পালন করবেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্‌হাব মিঞা। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই দায়িত্ব প্রদান করেছেন। গত ২ অক্টোবর শারীরিক অসুস্থার কারণ দেখিয়ে এক মাস ছুটির কথা উল্লেখ করে ১৩ অক্টোবরের কাছাকাছি সময়ে বিদেশে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি বরাবর চিঠি দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা।

গতকাল শুক্রবার ছিল তার ছুটির শেষ দিন। আজ শনিবার তার কাজে যোগদানের কথা ছিল। ছুটি নিয়ে গত ১৩ অক্টোবর রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে তিনি অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। সেদিন তার সরকারি বাসভবন থেকে বেরিয়ে বিমানবন্দরের পথে গাড়িতে ওঠার আগে বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের কাছে একটি লিখিত বিবৃতি দিয়ে যান।

ওই বিবৃতিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, তিনি অসুস্থ নন, সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। চাপে নয়, ছুটি কাটাতে স্বেচ্ছায় বিদেশে যাচ্ছেন। তিনি আবার ফিরে আসবেন। প্রধান বিচারপতির এমন বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে পরের দিন বিদেশে অর্থ পাচার, আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, নৈতিক স্খলনসহ সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে ১১ টি গুরুতর অভিযোগের কথা নজিরবিহীন এক বিবৃতির মাধ্যমে জানান সুপ্রিম কোর্ট।

প্রধান বিচারপতির এই ছুটিকে কেন্দ্র করে নানা বিতর্কের জন্ম দেয়। বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দাবি, ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে রায়ের কারণে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাকে জোরপূর্বক ‍ছুটিতে যেতে বাধ্য করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। যদির সরকারের পক্ষ থেকে তা নাচক করে দেয়া হয়।