প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা ছুটিতে দেশের বাইরে থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন- এমন খবর নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠার মধ্যেই দুপুরে বঙ্গভবন থেকে এর সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে। আজ শনিরবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির পদত্যাগপত্র বঙ্গভবনে এসে পৌঁছেছে।’

গত ২ অক্টোবর এক মাসের ছুটির আবেদন করেন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তিনি অসুস্থতার কারণে ছুটিতে যাচ্ছেন। এর পর গত ১০ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি সিনহা বিদেশে অবস্থানের জন্য অনুমতি চেয়ে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করে একটি চিঠি দেন। এতে তিনি ১৩ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের বাইরে থাকার কথা উল্লেখ করেন। তাঁর অবর্তমানে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা দায়িত্ব পান।

বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে করা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় গত ১ আগস্ট প্রকাশের পর থেকে মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন প্রধান বিচারপতি। জাতীয় সংসদেও তাঁর সমালোচনা করা হয়।

১৪ অক্টোবর রাতে দেশ ছাড়ার আগে প্রধান বিচারপতি অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এক পর্যায়ে কাগজে লেখা একটি বিবৃতি দিয়ে দেন। সেখানে শুরুতেই বলা আছে, ‘আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি।’

ওই বিবৃতিতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে শঙ্কাও প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। সাংবাদিকদের দেওয়া বিবৃতিটি লেখা ছিল প্রধান বিচারপতির প্যাডে। নিচে ছিল প্রধান বিচারপতির স্বাক্ষর। গতকাল ১০ নভেম্বর ছিল প্রধান বিচারপতির ছুটির শেষ দিন। তিনি দেশে ফিরে আসবেন, পুনরায় কাজে ফিরবেন, নাকি পদত্যাগ করবেন- এসব নিয়ে গণমাধ্যমে নানা খবর আসে। এর মধ্যেই মধ্যরাতে বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বলা হয়, প্রধান বিচারপতি তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়েছেন।

আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিখ ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনাস্থল গুরুদুয়ারায় ‘গুরুপূরব ও নগরকীর্ত্তন-২০১৭’ অনুষ্ঠান উদ্বোধন করতে যান ওবায়দুল কাদের। সে সময় সাংবাদিকরা তাঁর কাছে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের ব্যাপারে জানতে চান। প্রথমে ওবায়দুল কাদের বিষয়টি নিয়ে আজ বিকেলে গাজীপুরে কথা বলবেন বলে জানান। পরে তিনি এ বিষয়ে বলেন, ‘আকাশে চাঁদ উঠলে সবাই দেখবে।’