রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ তুলেছে ফিলিপাইনের ব্যাংক রিজাল কর্মাসিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশন (আরসিবিসি)। তাদের অভিযোগ, নিজেদের অবহেলা আড়াল করে ব্যাংকটিকে ‘বলির পাঠা’ করতে চাইছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার অর্থমন্ত্রী আবুল আব্দুল মুহিতের মন্তব্যের জবাবে এই বিবৃতি দেয় (আরসিবিসি)। অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ম্যানিলার ব্যাংকটিকে তিনি মুছে ফেলবেন।কিছুদিন আগেই রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিলো, আরবিসির বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।আরসিবিসির লিগাল অ্যাফেয়ার্স এর প্রধান জর্জ দেলা কস্টা বলেন, ‘ফিলিপাইন সিনেট ও নীতিনির্ধারকের কাছে আইনত যা করা প্রয়োজন করেছে আরবিসি। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক সবকিছু লুকানোর চেষ্টা করেছে।২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিউ ইয়র্ক ফেড অ্যাকাউন্ট থেকে আট কোটি দশ লাখ ডলার চুরি করে হ্যাকাররা। সুইফট সিস্টেমের মাধ্যমে ভুয়া আদেশে এই অর্থ চুরি করা হয়। এই চুরির অর্থ ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোশেনে (আরসিবিসি) পাঠানো হয়। সেখান থেকে তা দেশটির ক্যাসিনোগুলোতে চলে যায়।

রিজার্ভ চুরির প্রায় দুই বছর হতে চললেও বিশ্বের বৃহত্তম হ্যাকিংয়ের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে পারেনি বাংলাদেশ। আর উদ্ধার করা হয়েছে মাত্র দেড়কোটি ডলার। দেলা কস্টা বলেন,‘অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংককে দায় নিতে হবে। স্বচ্ছ জবাব দিতে অস্বীকৃতিই আসলে সবকিছু আড়াল করছে এবং বৈশ্বিকভাবে সাইবার হামলার মোকাবিলা করা যাচ্ছে না।তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অবহেলার শিকার হয়েছে আরসিবিসি।মানি লন্ডারিং অভিযোগের জন্য অসৎ কর্মী ও ফিলিপাইনের আইনজীবীদের দায়ী করেছে আরসিবিসি। ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজার ও চারজনের একাউন্টের মাধ্যমে টাকা চুরি হয়। কিন্তু অ্যাকাউন্টগুলো ভুয়া নামে খোলায় তাদের ধরতে পারেনি কেউ।গত বছর এই টাকা উদ্ধারে ব্যর্থ হওয়ায় ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরসিবিসিকে ২ কোটি ডলার জরিমানা করে।নভেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ও নিউ ইয়র্ক ফেডের কর্মকর্তারা কনফারেন্স কলের মাধ্যমে আরসিবিসি’র বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন। এই আলোচনায় সুইফটের দুই প্রতিনিধিও অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা সম্পর্কে অবহিত তিনটি সূত্র রয়টার্সকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এতে সিদ্ধান্ত হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক মামলার বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাঠাবে নিউ ইয়র্ক ফেডের কাছে।একটি সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের মার্চ-এপ্রিলের দিকে নিউ ইয়র্কে মামলা দায়েরের লক্ষ্য রয়েছে। কাজ চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংক শিগগিরই প্রস্তাব পাঠাবে।