দীর্ঘ ৮ বছরের নির্মাণযজ্ঞের পরে প্রথমবারের মতো উভচর উড়োজাহাজের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশন অব চায়না (এভিআইসি)। এজি৬০০ মডেলের উড়োজাহাজটি মাটিতে, আকাশে ও পানিতে চলাচলে সক্ষম। উড়োজাহাজটিকে ‘কুনলং’ নামে ডাকা হচ্ছে।

চীনের গুয়াংডং প্রদেশে রোববার সকালে উভচর ওই উড়োজাহাজটি জিনওয়ান বিমানবন্দর থেকে উড়ে দক্ষিণ চীন সাগরের উপকূল পরিভ্রমণ করে। ১ ঘণ্টা পর অবতরণ করলে উড়োজাহাজটিকে সামরিক সংগীতের মাধ্যমে অভ্যর্থনা জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত জনতাকে চীনের জাতীয় পতাকা হাতে উল্লাস করতে দেখা যায়। চীনা সংস্কৃতিতে ‘কুনলং’ উচ্চাশার প্রতীক, চীনা ভাষায় বিরাট এক পৌরাণিক মাছকে ‘কুন’ আর লং মানে ‘ড্রাগন’। এভিআইসি এর তৈরি এই উভচর যানটি মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের ৭৩৭ মডেলের সমান। ৩৯ দশমিক ৬ মিটার দীর্ঘ উড়োজাহাজটিতে ৪টি টার্বোপ্রপ ইঞ্জিন রয়েছে, এটি সর্বোচ্চ ৫৩ দশমিক ৫ টন মাল বহনে সক্ষম। সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৫০০ কিলোমিটার গতিতে একটানা ১২ ঘণ্টা উড্ডয়নে সক্ষম যানটি। যানটি সর্বোচ্চ ৫০ জন মানুষ বহন করতে পারবে। উভচর উড়োজাহাজটি সামরিক প্রয়োজনে ব্যবহারের উপযুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে। তবে এটি মূলত অগ্নিনির্বাপণ ও সামুদ্রিক উদ্ধারাভিযানে ব্যবহার করা হবে। চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি এ প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানিয়েছে। এরই মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উড়োজাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানটি ‘কুনলং’য়ের ১৭টি ক্রয়াদেশ পেয়ে গেছে।

শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহারের কথা বলা হলেও যানটির সামরিক গুরুত্ব নিয়েও কথা বলতে শুরু করেছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। দক্ষিণ চীন সাগরের সমুদ্রপথগুলোয় প্রতি বছর ৫ ট্রিলিয়ন ডলার বাণিজ্য হয়। বাণিজ্য পথে নিকটস্থ দেশগুলোর মধ্যে নিয়মিত লেগে থাকা বিরোধ সামাল দিতে চীনের এই উভচর যানটি বেশ কাজে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।