গাজীপুরর সালনা এলাকায় খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী একটি কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ট্রেনের এক যাত্রীসহ দুইজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছে। সংঘর্ষের এ ঘটনায় ট্রেনটির ইঞ্জিন বিকল ও ভ্যানটি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। ঘটনার পর থেকে রাত ১২টা ২০মিনিট পর্যন্ত প্রায় ৩ঘন্টা ঢাকা-রাজশাহী রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। নিহতদের মধ্যে একজন হলেন ময়মনসিংহের ফুলপুরের মো. সেলিম (২৭)। তিনি স্থানীয় টিএম ফ্যাশন কারখানায় লোডার পদে চাকুরি করতেন। নিহত ট্রেনের যাত্রী অন্যজনের (২৬) পরিচয় জানা যায়নি।

জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন পুলিশ ফাঁড়ির এসআই এসএম রাকিবুল আলম, ট্রেনের যাত্রী মাহবুবুল আলম পলাশ ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সালনার মোল্লাপাড়া এলাকার টিএম ফ্যাশন নামের একটি পোশাক কারখানা থেকে শিপমেন্টের পোশাক ভরে একটি কাভার্ডভ্যান মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথে সালনা-জোলারপাড় সড়কের মোল্লাপাড়া এলাকার বেরিয়ারবিহীন রেলক্রসিং পয়েন্ট দিয়ে ঢাকা-খুলনা রেললাইন অতিক্রম করার সময় কাভার্ডভ্যানটির সঙ্গে দ্রুতগতিতে খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। এতে কাভার্ডভ্যানটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং রেললাইন থেকে অন্ততঃ ৫০ ফুট দূরে ছিটকে পড়ে। এঘটনায় ইঞ্জিন বিকল ট্রেনটি প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে টেকিবাড়ি এলাকায় গিয়ে ট্রেনটি থেমে যায়। এদূর্ঘটনায় ট্রেনের সামনে ইঞ্জিনের বগিতে থাকা একজন (অজ্ঞাত) ও কাভার্ডভ্যানের আরোহীসহ দুইজন নিহত এবং ভ্যানের অপর তিন আরোহী আহত হয়। স্থানীয়রা হতাহত চারজনকে উদ্ধার করে শহীদ তাজ উদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। হাসপাতালের চিকিৎসক এদের মধ্যে সেলিম নামের একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। এঘটনায় আহত কাভার্ড ভ্যান চালক সাইফুল ইসলাম (২৫) এবং ভ্যানে থাকা কারখানার প্যাকিংম্যান আরমানের (২৬)সহ অপর তিনজনকে আশংকাজনক অবস্থায় সেখান থেকে ঢামেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। তবে হতাহত অন্যদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি। দূর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ইঞ্জিনের বগি থেকে নিহত একজনের লাশ উদ্ধার করে। এদিকে দূর্ঘটনার কারণে ওই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং জয়দেবপুর জংশনে দ্রুতযান, মৌচাক স্টেশনে পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনসহ আশেপাশের ষ্টেশনগুলোতে কয়েকটি ট্রেন যাত্রাবিরতি করে। রাত ১২টা ২০মিনিটের দিকে অন্য একটি ইঞ্জিন দিয়ে দূর্ঘটনা কবলিত ট্রেনটিকে জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন ষ্টেশনে সরিয়ে নেয়া হলে প্রায় তিনঘন্টা পর ওই রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে ক্ষতিগ্রস্থ ইঞ্জিন পরিবর্তনের জন্য চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি যাত্রীসহ রাত সাড়ে ১২টায় এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন ষ্টেশনে অপর একটি ইঞ্জিনের জন্য অপেক্ষা করছিল।

জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের ষ্টেশন মাষ্টার মোঃ শাহজাহান মিয়া জানান, ঢাকার কমলাপুর থেকে ছেড়ে আসা চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি মঙ্গলবার রাত ৯টা ২০মিনিটে জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন ষ্টেশন থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এর ১০মিনিট পর ঢাকা-রাজশাহী রেলরুটের সালনা এলাকায় বেরিয়ার বিহীন অবৈধ একটি ক্রসিং পয়েন্টে ট্রেনটির সঙ্গে একটি কভার্ডভ্যানের সংঘর্ষ হয়। এতে ট্রেনটির ইঞ্জিন বিকল ও ভ্যানটি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। দূর্ঘটনার কারণে ওই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং আশেপাশের ষ্টেশনগুলোতে কয়েকটি ট্রেন যাত্রাবিরতি করে। রাত ১২টা ২০মিনিটের দিকে অন্য একটি ইঞ্জিন দিয়ে দূর্ঘটনা কবলিত ট্রেনটিকে জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন ষ্টেশনে সরিয়ে নেয়া হলে প্রায় তিনঘন্টা পর ওই রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে ক্ষতিগ্রস্থ ইঞ্জিন পরিবর্তনের জন্য চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি যাত্রীসহ জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন ষ্টেশনে অপর একটি ইঞ্জিনের জন্য অপেক্ষা করছে।

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক মোঃ এরশাদ উল্লাহ জানান, ট্রেন ও কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষের ঘটনায় একজনকে মৃত ও অপর আহত তিনজনকে আশংকাজনক অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।