আন্দোলনের মুখে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রায়ত্ত আট ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে এক জরুরি বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। গভর্নর ফজলে কবীরের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্য এবং ১৪টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীরা অংশ নেন। এছাড়াও সেখানে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন। জরুরি ওই বৈঠকে পরীক্ষায় অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠনেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর নতুন করে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হবে বলেও বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গত ১২ জানুয়ারি বিএসসির অধীনে সরকারি আট ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষায় নানা অনিয়মের ঘটনায় ওই দিনই তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে একটি পেজ খুলে প্রচারণা চালান ও রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক ঘেরাওয়ের জন্য নিজেরা একত্রিত হওয়ার ঘোষণা দেন। সে অনুযায়ী এক বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন তারা। রাষ্ট্রায়ত্ত সরকারি আট ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল, সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির (বিএসসি) সদস্য সচিব মোশাররফ হোসেন খানের পদত্যাগ এবং পিএসসির অধীনে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে চাকরিপ্রার্থীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সোমবার মতিঝিল বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর ছয় দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেন তারা।

পরীক্ষায় অব্যবস্থাপনা, প্রশ্নফাঁস, হলে ইলেক্ট্রনিকস ডিভাইস ব্যবহারের সুযোগ দেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে পরীক্ষার্থীরা এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। রাষ্ট্রায়ত্ত আট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ৬৬৩টি সিনিয়র অফিসার পদে সমন্বিতভাবে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় গত বছরের আগস্টে। এই পরীক্ষার মাত্র পাঁচ দিন আগে রাষ্ট্রায়ত্ত তিন ব্যাংক সোনালী, রূপালী এবং জনতার সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রমে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দেওয়ায় সমন্বিত এ পরীক্ষা অনুষ্ঠান নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। পরে চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টে সে রায় ছয় সপ্তাহের জন্য স্থগিত করলে পরীক্ষার একদিন আগে গত বৃহস্পতিবার বিএসসির পক্ষ থেকে জানানো হয় আট ব্যাংকেরই পরীক্ষা হবে। সে ঘোষণা অনুযায়ী গত ১২ জানুয়ারি বিকেলে ঢাকা সিটির ৬১টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।