চলতি বছর থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় বহু নির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) বাদ দিয়ে শতভাগ যোগ্যতাভিত্তিক বা সৃজনশীল প্রশ্ন রাখা হচ্ছে।মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর বৃত্তির ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এ কথা জানিয়েছেন।

গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রাথমিক সমাপনীতে এমসিকিউ রাখছি না। প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। প্রশ্নফাঁস এড়াতেই গুণীদের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিলেবাস থেকেই প্রশ্ন লিখতে হবে শিক্ষার্থীদের।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সময় যে ঘটনাগুলো ঘটেছিল বা সেগুলো নিয়ে জ্ঞানী-গুণী-বিদগ্ধদের মধ্যে যে আলোচনা হয়েছে, আমরা বিভিন্ন আলোচনার মধ্যদিয়ে অনেক পরামর্শ পেয়েছি। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সাজেশন দিয়েছেন। আমরা চাই নকলমুক্ত পরিবেশে আমাদের ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষা দিক।মন্ত্রী বলেন, আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। আরও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। পরিপত্র জারি করা হয়েছে। স্কুলগুলোতে মেসেজ চলে গেছে। স্কুলে বাচ্চাদের বলেছি পুরোপুরি সিলেবাসের উপর থাকেন, সিলেবাসের মধ্য থেকে কোনটা আসবে সেটা নিয়ে কাজ করছি।পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ২০০৯ সালে শুরু হওয়া প্রাথমিক সমাপনীতে ২০১২ সালে ১০ শতাংশ সৃজনশীল প্রশ্ন সংযোজন করা হয়েছিল। ২০১৩ সালে ২৫ শতাংশ, ২০১৪ সালে ৩৫ শতাংশ এবং ২০১৫ সালে ৫০ শতাংশ সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৭ সালে ৮০ শতাংশ এবং ২০১৬ সালে প্রতি বিষয়ে ৬৫ শতাংশ প্রশ্ন যোগ্যতাভিত্তিক ছিল।সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আসিফ-উজ-জামান, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব আকরাম-আল- হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, এ বছর প্রাথমিক বৃত্তি পেয়েছে ৮২ হাজার ৫০০ জন তারমধ্যে ৩৩ হাজার ট্যালেন্টপুলে এবং ৪৯ হাজার ৫০০ জন সাধারণ বৃত্তি পেয়েছে।মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনের এ তথ্য জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এ বৃত্তি দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।সংবাদ সম্মেলনে বৃত্তির ফল প্রকাশ করে তিনি জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মোট ৮২ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীর জন্য বৃত্তি দেয়া হয়। এবার মেধা কোটায় দুজন এবং সাধারণ কোটায় ২৫ জন কাক্সিক্ষত শিক্ষার্থী না পাওয়ায় কোটা পূরণ করা যায়নি।তবে এটা পরে সমন্বয় করা হবে বলে মন্ত্রী জানান।২০১৫ সাল থেকে মেধা কোটায় বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা মাসে ৩০০ টাকা করে পায়। আর সাধারণ কোটায় বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা পায় মাসে ২২৫ টাকা করে। এর আগে এই বৃত্তি ছিল মেধা কোটার জন্য ২০০ টাকা এবং সাধারণ কোটার জন্য ১৫০ টাকা।প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে (িি.িফঢ়ব.মড়া.নফ) বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তালিকা পাওয়া যাবে।