বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আজকে মাইনাস ওয়ানের কথা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু মাইনাস টু-এর কুশীলবরা এখনো বেঁচে আছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে আমি বলতে চাই, আপনিও কিন্তু মাইনাস টু-এর একজন ছিলেন। যেদিন খালেদা জিয়া মাইনাস হবেন, তারপর বেশিক্ষণ লাগবে নাÑমুহূর্তের মধ্যে আপনিও মাইনাস হয়ে যাবেন।অতএব সাধু সাবধান।শুক্রবার দুপুরে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মিলিত ছাত্র ফোরাম আয়োজিত এক স্মরণসভায় খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন।বিএনপির সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টুর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন,সরকার যদি বলে বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনের বিষয়ে কোনো সমঝোতা হবে না। তাহলে সমঝোতার দরকার নেই। জনগণ এবং বিএনপির বন্ধুরাষ্ট্রগুলো যেটা চায়, সেটা হলো আগামী নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক হোক। আর এটা হতে হলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও নিরপেক্ষ সরকার লাগবে। খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে।
খালেদা জিয়ার কারাদন্ডের বিষয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, সরকার আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘায়িত করছে। এটার একটিই উদ্দেশ্য, একাদশ জাতীয় নির্বাচনে খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে মাইনাস করা। তিনি আরও বলেন, সরকারের ‘নিয়ন্ত্রিত বিচার বিভাগের’ মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না।গণজাগরণের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।আগামী বাজেট বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, এবারের বাজেটে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করতে হয়েছে। কারণ রাজস্ব আদায় হয়নি।গত বছরের বাজেট টার্গেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। সেখানে তার চেয়ে বড় বাজেট করার অর্থ কী? একমাত্র উদ্দেশ্য, নির্বাচনী বছরে দেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা।খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর পক্ষে ‘ভোট’ করছে বলে অভিযোগ করেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, খুলনায় যে নির্বাচন হচ্ছে, আপনারা প্রত্যেকদিন শুনছেন, আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। যারা এজেন্ট হবেন তাদেরকে হুমকি দেয়া হচ্ছে, পুলিশ তাদেরকে নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে প্রশাসন ও পুলিশ ডিপার্টমেন্ট নৌকার পক্ষে ভোট করছে। আওয়ামী লীগ করেছে না। আমরা বলতে চাই, এই অবস্থা দেশের জনগণ সহ্য করবে না।নির্বাচনে বছরে সরকার বড় বাজেটের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগও করেন তিনি।খন্দকার মোশাররফ বলেন, এই সরকার আবার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করার জন্য একটা বিরাট বাজেট নিয়ে আসছে দেখানোর জন্য। পত্র-পত্রিকায় আজেকে দেখেছেন ৩৫/৪০ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করতে হয়েছে, রাজস্ব আদায় হয়নি।তারপরে আবার সেখানে গতবছরের বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব হয় নাই। এবার আবার তার চেয়ে বড় বাজেট করার কী অর্থ থাকতে পারে? উদ্দেশ্যে এদেশের জনগণকে নির্বাচনের বছরে প্রতারণা করা। দেশের মানুষ এতো বোকা নয়।পিন্টুর মৃত্যুর বিষয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, পিন্টুর মৃত্যুর কারণ তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। সুতরাং এর জন্য যারা দায়ী, দেশের জনগণ একদিন তাদের বিচার করবে। বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমসহ বিএনপির অনেক নেতা নিখোঁজ হয়েছেন। অনেককে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। এসব বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের বিচার হবে।
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক নাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।সংগঠনের সভাপতি নাহিদুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, মহানগর উত্তরের শামীম পারভেজ, ছাত্র দলের জয়দেব জয়, এম এ গাফফার, কৃষক দলের জাহাঙ্গীর আলম ও মুসা ফরাজী বক্তব্য দেন।