ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্য ও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বান্দরবানে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওয়া উৎসব (আষাঢ়ে পূর্ণিমা) শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ সকাল থেকে বান্দরবানের বৌদ্ধ বিহারগুলোতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। পুণ্য লাভের আশায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ শুক্রবার থেকে তিন মাসব্যাপী বর্ষাবাস পালন করবে। এসব অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বান্দরবানের বৌদ্ধ বিহারগুলোতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী পুরুষের ঢল নামে। এ সময় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মপ্রাণ নারী-পুরুষরা পূণ্যলাভের আশায় নানান ধরনের মিষ্টান্ন ও উৎকৃষ্ট খাবার ক্যাংগুলোতে অবস্থানরত ভিক্ষুদের মধ্যে উৎসর্গ করেন।

বান্দরবানের রাজগুরু বৌদ্ধবিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি চ হ্লা প্রু জিমি বলেন, আমরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী, বৌদ্ধ ধর্মে চারটি চতুরায্য ধাপ আছে, তার মধ্যে আষাঢ়ে পূর্ণিমা হচ্ছে প্রথম ধাপ। মূলত আষাঢ়ে পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মপ্রাণ মানুষেরা মন্দিরগুলোতে অবস্থান নিয়ে বর্ষাবাস পালন করে থাকেন।

তিনি আরও বলেন, বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো হয়েছিল বিভিন্ন পূর্ণিমাকে ঘিরে। তাই বৌদ্ধদের কাছে পূর্ণিমা মানেই জীবনের পরিপূর্ণতা। এরমধ্যে অন্যতম হলো তিথি শুভ আষাঢ়ে পূর্ণিমা। আর এ উৎসবকেই পাহাড়ি বৌদ্ধরা ওয়া উৎসব বলে থাকেন। এ উপলক্ষে নানা আনুষ্ঠানিকতায় বিহারগুলো উৎসবমুখর হয়ে উঠে।

এদিকে ওয়া উৎসব উপলক্ষে শহরের উজানীপাড়া বৌদ্ধবিহার, রাজগুরু বৌদ্ধবিহার, বৌদ্ধ ধাতু জাদী, করুণাপুর বৌদ্ধবিহার, রাম জাদীসহ বিভিন্ন ক্যাং এ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। বৌদ্ধ বিহারগুলোতে তিন দিনব্যাপী পঞ্চশীল, অষ্টশীল গ্রহণ, পি-দান ও ধর্মীয় দেশনার আয়োজন করা হয়েছে। আজ সন্ধ্যায় ক্যাংগুলোতে শুরু হবে বিশেষ প্রার্থনা। তিন মাস ওয়া বা বর্ষাবাস পালন শেষে বান্দরবানে ঐতিহ্যবাহী রথ টানা উৎসব ও কঠিন চীবর দান উৎসব পালন করে থাকেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা।