ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে এক সপ্তাহের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা করে তাৎক্ষণিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।জাবালে নূর পরিবহন কর্তৃপক্ষকে এই ক্ষতিপূরণ পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।ক্ষতিপূরণের অর্থ নিহতদের পরিবার পেল কিনা তা নিশ্চিত করে পরবর্তী শুনানির দিন ১২ অগাস্ট প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বিআরটিএকে।

এছাড়াও এ দুর্ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে জাবালে নূর পরিবহনকে চিকিৎসা ব্যয় বহন করারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চেয়ে সোমবার জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেয়।আদালতে রিটকারী আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ফরিদা ইয়াসমিন ও মো. মিজানুর রমান।রিট আবেদনে স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক পরিবহন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকার পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক), বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি এবং জাবালে নূর পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বিবাদী করা হয়।

আইনজীবী কাজল বলেন, মর্মান্তিক দূর্ঘটনা রোধে বিদ্যমান ট্রাফিক আইন কঠোরভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে নিরাপদ যাত্রী পরিবহন ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের নিহত শিক্ষার্থী আব্দুল করিম ও দিয়া খানম মিমের পরিবারকে দুই কোটি করে মোট চার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।তিনি বলেন, আদালত দুই পরিবারকে তাৎক্ষণিক ক্ষতিপূরণ বাবদ জাবালে নূর পরিবহনকে এক সপ্তাহের মধ্যে ৫ লাখ টাকা করে দেওয়ার পাশাপাশি গণপরিবহনের চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স কোন যোগ্যতার ভিত্তি দেওয়া হয় এবং সড়কে চলাচলকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিআরটিএ কী পদক্ষেপ নিয়েছে সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বিআরটিএকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।এই প্রতিবেদনটিও আগামী ১২ আগস্টের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে। রোববার বিমানবন্দর সড়কের বাম পাশে বাসের অপেক্ষায় থাকা শিক্ষার্থীদের জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী দিয়া আক্তার মিম ও আব্দুল করিমের মৃত্যু হয়। এছাড়া বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।দুর্ঘটনার পর রাস্তা আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ভাংচুর করা হয় বেশ কয়েকটি গাড়ি। রোববারও বিমানবন্দর সড়ক আটকে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।এ ঘটনায় বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবর আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল সোমবার দুপুরে বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে উপস্থাপন করে স্বতঃপ্রণোদিত রুল ও নির্দেশনা চাইলে আদালত তাকে বাদি হয়ে রিট আবেদন করতে বলে।একই সঙ্গে ওই দুর্ঘটনায় হতাহতদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে সংশ্লিষ্ট আদালতের সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরিদা ইয়াসমিনকে মৌখিকভাবে নির্দেশ দেয়।আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেন কাজল।

রিটের আরজি অনুযায়ী, কুর্মিটোলার এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় জাবালে নূর পরিবহনের দায় নিরূপনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালকের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।রিটকারী আইনজীবী কাজল বলেন, তদন্তে অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালককে সহযোগিতা করবেন ঢাকার অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) এবং বিআরটিএর চেয়ারম্যান। তাদেরকে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।