ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় ইতিমধ্যেই অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষককে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এদিকে গত সোমবার অরিত্রির বাবা-মার সঙ্গে অধ্যক্ষের কক্ষের সেদিনকার একটি সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে। সেখানে আঙ্গুল দেখিয়ে অরিত্রির বাবা-মাকে শাসাতে দেখা গেছে অধ্যক্ষকে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সোমবার বেলা ১১টা ১৮ মিনিটে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌসের সঙ্গে তার কক্ষে দেখা করতে যান অরিত্রিসহ তার বাবা-মা। এ সময় কক্ষে আরও কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকা উপস্থিত ছিলেন।

ভিডিওতে দেখা গেছে, অরিত্রি ও তার মা দাঁড়িয়ে আছেন, আর তাদেরকে আঙ্গুল তুলে শাসিয়ে যাচ্ছেন অধ্যক্ষ নাজনীন। অন্যদিকে অরিত্রির বাবা অধ্যক্ষের সঙ্গে বিষয়টি সমঝোতায় আনার চেষ্টা করছেন বলে দেখা যাচ্ছে। এক পর্যায়ে দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় কথা বলেন অরিত্রির মা। তখন অরিত্রির দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে কথা বলতে দেখা গেছে নাজনীন ফেরদৌসকে।

ভিডিওর চার মিনিটের মাথায় আলোচনা শেষে এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত অবস্থায় নিজের চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে যান অধ্যক্ষ নাজনীন। এ সময় কক্ষ থেকে বেরিয়ে যায় অরিত্রি। অরিত্রির বেরিয়ে যাওয়া দেখে আবার নিজের চেয়ারে গিয়ে বসেন তিনি। এ সময় অরিত্রির বাবা-মা তার কাছে আবার মিনতি করতে আসলে তাদেরকে হাত নাড়িয়ে রাগান্বিত অবস্থায় কথা বলতে দেখা গেছে অধ্যক্ষকে। শেষ মুহূর্তে আবারও মিনতি করতে দেখা গেছে অরিত্রির বাবাকে। তবে এবারও ক্ষিপ্ত অবস্থায় আঙ্গুল দেখিয়ে জবাব দিতে দেখা গেছে অধ্যক্ষ নাজনীনকে। সাড়ে আট মিনিটের এই ভিডিওতে এমনই দৃশ্য উঠে এসেছে।

এদিকে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ বলেন, ভিকারুননিসা শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীকে ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা’র অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে মন্ত্রণালয়ের গঠিত তিন সদস্যের কমিটি। এ কারণে তিনজনকে বরখাস্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের এমপিও বাতিল করা হয়েছে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আক্তার ও শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনাকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করেছে কমিটি।

এর আগে সহপাঠী শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীকে ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা’ দিয়ে মৃত্যুর পথ বেছে নিতে বাধ্য করার প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। সহপাঠীর আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে বেইলি রোড শাখার গেটের বাইরে বসে পড়ে তারা। এ সময় ভিকারুননিসা ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরের সড়কে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিজ’ (ন্যায় বিচার চাই) স্লোগান দেয় তারা। এ ছাড়া নানা ধরনের প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড তৈরি করে তা প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীরা।