জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের গাড়িবহরে ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দাবি জানিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট।

শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ফ্রন্টের পক্ষ থেকে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিখিতভাবে এ দাবি জানায়।পরে আলাল সাংবাদিকদের বলেন, সব জায়গায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে ডশাসন, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। এ তিন বাহিনীর মোকাবেলা করা আমাদের কাজ নয়। আমাদের কাজ হচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়া। এ তিন বাহিনীকে মোকাবেলা করতেতো আমরা পারবো না। তারা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এগুলো করছে।

তিনি আরও বলেন, শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) সারাদেশে বিভিন্ন আসনে যে হামলা ও সহিংসতা হয়েছে, সে বিষয়গুলো আমরা ইসিকে জানিয়েছি। আক্রমণ বন্ধ করতে ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে অনুরোধ করছি।বিএনপির এ নেতা বলেন, যে পুলিশের দায়িত্বশীল আচরণের মধ্য দিয়ে আক্রমণ থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি, সে পুলিশদের বিরুদ্ধে আমরা যতো অভিযোগ করেছি, সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলো থেকে একজন পুলিশকেও বদলি বা ক্লোজ করা হয়নি। একথা আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলেছি। আমরা বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে ফিরে যাচ্ছি। কিন্তু তারাতো এ সুযোগে দ্বিগুণ উৎসাহে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে।

বিএপির যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, সাবেক নির্বাচিত সংসদ সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদের স্ত্রী ও বিএনপি প্রার্থী রোমানা মাহমুদের নির্বাচনী প্রচারণায় গুলি করা হয়েছে। তিনি আহত এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। তার কর্মীরাও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আমরা মামলা করতে গিয়েছি, পুলিশ মামলা নেয়নি। এখন পর্যন্ত অন্য কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি। এ ঘটনায় সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু দাউদকে প্রত্যাহার করতে বলেছি।আলাল বলেন, বড় কিছুই চাইনি নির্বাচন কমিশনের কাছে। তাদের ক্লোজ করার জন্য বলেছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কয়েকদিন আগে বললেন- নির্বাচনের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। আমরাতো জীবন নিয়েই বাঁচতে পারছি না।তিনি আরও বলেন, ড. কামাল হোসেনের ওপর হামলার বিষয়ে ইসি সচিব বলেছেন, ওনারা নাকি অবহিতই না। এটা খুব আশ্চর্য় লাগে আমাদের কাছে। খুব কষ্ট লাগে। এটা আমাদের কাছে খুব বিস্ময়কর লাগে। এটা কিভাবে সম্ভব!

নির্বাচন কমিশন সচিব বলেছেন, ওনারা জানতেন না এবং টিভিতেও দেখতে পারেননি। পরবর্তীতে ওনারা ঘটনাটি শুনেছেন অফিস আওয়ারের পরে। ওনারা কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেননি। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আলাল বলেন, ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশনের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ যদি প্রচণ্ডভাবে সরকারের প্রতি অনুগত থাকে, সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য নিজেরা সাবোটাইজ করে, প্রতিপক্ষের ওপর চাপিয়ে দেয়। এখন সেটা নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত স্পর্শ করেছে কিনা, সেটাতো একটা প্রশ্ন থেকে যায়। নইলে একই সুরে কথাতো আমরা আশা করি না। এতো মারপিটের পরও আমরা মাঠে আছি। আমরা ৩০ ডিসেম্বর পর‌্যন্ত থাকবো। এ ধরনের কথায় আমরা হতবাক, বিস্মিত হয়েছি।তিনি আরও বলেন, আপনারা জেনেছেন আমরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে জাতীয় ঐকফ্রন্টের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎ করার জন্য চিঠি দিয়েছি। কেননা, নির্বাচন কমিশন আমাদের বক্তব্য শোনেন, কিন্তু প্রতিকার পাই না। তাই সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে আমরা ওনার কাছেও বলবো। তাও কাজ না হলে জনগণের কাছে বিচারের ভার ছেড়ে দেবো।এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী উপস্থিত ছিলেন।