২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। ফলে সংশোধিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে দুই লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর ও অর্থমন্ত্রালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। যেখানে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় দুই লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা। এবার সংশোধিত বাজেটের আকার দাঁড়াচ্ছে চার লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা।

সেই হিসেবে মূল বাজেট থেকে সংশোধিত বাজেটের পরিমাণ কমছে ১৯ হাজার কোটি টাকা বা ৫ শতাংশ। ইতোমধ্যে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট চূড়ান্ত করেছে সরকার। সংশোধিত বাজেটে রাজস্ব বোর্ডে লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকা।

জানা গেছে, আগামী মাসে সম্পদ কমিটির বৈঠকে সংশোধিত বিষয়গুলোর অনুমোদন দেয়া হবে। একই সঙ্গে ওই বৈঠকেআগামী অর্থবছরের (২০১৯-২০) বাজেটের সম্ভাব্য আকার নিয়ে আলোচনা করা হবে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালবৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন।

এনবিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে রাজস্ব আয় বেড়েছে মাত্র আট শতাংশ। নিজস্বসম্পদ আহরণে এমন নাজুক পরিস্থিতির কারণে সংশোধিত বাজেটের আকার নির্ধারণে হিমশিম খেতে হয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের।

বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘এ বছর রাজস্ব আয়ে কম প্রবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকার। রাজস্ব আয়ে ব্যাপক ঘাটতির কারণে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণগ্রহণ বেড়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিয়েছে তিন হাজার ৮৪৮ কোটিটাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে সরকারকে ব্যাংক থেকে কোনো ঋণ নিতে হয়নি। বরং সাত হাজার কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করেছিল।

এদিকে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক ভালো থাকার পরও রাজস্ব আয় নিয়ে এবার চাপের মুখে রয়েছে সরকার। এনবিআর’র পক্ষথেকে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের বর্তমান যে প্রবণতা, তাতে অর্থবছর শেষে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ কোটিটাকার বেশি রাজস্ব আদায় করা যাবে না। এবরের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অত্যন্ত উচ্চাভিলাসী।

এনবিআর-এর কর্মকর্তারা জানান, চলতি অর্থবছরে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে গত অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ৩১শতাংশ হারে রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।