নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরে হ্যাগিল পার্ক এলাকায় দুই মসজিদে হামলাকারী বন্দুকধারী ব্রেন্টন ট্যারান্টকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশে দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। শুক্রবারে জুমার নামাজে হামলার কিছু পরই পুলিশের হাতে আটক হামলার প্রধান সন্দেহভাজন বন্দুকধারীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে পুলিশ ক্রাইস্টচার্চ জেলা আদালতে হাজির করে।

মার্কিন বার্তা সংস্থা থমসন রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আদালত ব্রেন্টন ট্যারান্টের জামিনবিহীন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এতে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ ব্রেন্টনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন। ওই দিন তাকে সাউথ আইল্যান্ড সিটি হাইকোর্টে তোলা হবে।

জুমার নামাজের সময় কালো কাপড় ও হেলমেট পরা এক বন্দুকধারী ক্রাইস্টচার্চ শহরে হ্যাগিল পার্ক এলাকায় আল নুর মসজিদে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি করে শুরু করে। এতে সর্বশেষ ৪৯ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ২০ জন। এর মধ্যে তিনজন বাংলাদেশি রয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে আরো এক বাংলাদেশি। জানা যায়, শহরের আরো একটি মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটেছে।এ ঘটনায় অনলাইনে সরাসরি হামলার ভিডিওচিত্র সম্প্রচারকারী এক বন্দুকধারীর নাম ব্রেন্টন ট্যারান্ট। ২৮ বছর বয়সী এই যুবকের মাথায় ক্যামেরা লাগানো ছিল। ব্রেন্টন জন্মসূত্রে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। সে দেশটির উত্তরাঞ্চলের গ্রাফটন শহরের বাসিন্দা। হামলার আগে অনলাইনে পোস্ট করা ৭৩ পৃষ্ঠার এক ইশতেহারে সে হামলার কারণ বর্ণনা করেছে।

সেখানে ব্রেন্টন নিজেকে একজন সাধারণ শ্বেতাঙ্গ হিসেবে পরিচয় দেয়। মূলত শ্বেতাঙ্গদের ভূ-খন্ড কখনোই অনুপ্রবেশকারীদের হবে না এটা বুঝিয়ে দিতেই ওই হামলা চালানো হয় বলে ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই হামলার ঘটনায় আরো দুজন তাদের হাতে আটক রয়েছেন। যদিও এদের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের তথ্য নেই।এদিকে পুলিশের সরবরাহ করা এক ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ব্রেন্টন টারান্টকে সাদা রঙের কয়েদিদের শার্ট এবং হাতকড়া পড়া অবস্থায় আদালতে হাজির করা হয়। তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ আনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের নাম প্রকাশ করেছে পরিবার। ওই ব্যক্তির নাম দাউদ নবী (৭১)। তিনি আশির দশকে আফগানিস্তান থেকে নিউজিল্যান্ডে আসেন। বাকিদের নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে নিহতদের মধ্যে দুই বছরের এক শিশু এবং ১৩ বছরের এক কিশোর রয়েছে।