একুশে পদকপ্রাপ্ত দেশবরণ্যে কণ্ঠশিল্পী সড়ক দুর্ঘটনায় আহত খুরশীদ আলমকে (৭৫) বগুড়া থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নেয়া হয়েছে। শনিবার দুপুরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপা তাল থেকে ঢাকায় গ্রীন লাইফ হাসপাতালে নিয়ে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, তার শরীরিক অবস্থা এখন পর্যন্ত ভালো আছে।

এর আগে শুক্রবার রাত ৩টায় কণ্ঠশিল্পী খুরশীদ আলম বগুড়া শহরের ঠেঙ্গামারায় তারকা হোটেল মমইন এ প্রাইভেটকার যোগে ফেরার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাক চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। ট্রাকের চাপায় খুরশীদ আলম এর মাথা ও মুখে আগাত লাগে। এসময় ওই কারে থাকা ভক্ত খোকন আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে দ্রুত বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন।

খুরশিদ আলম বৃহত্তর বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৬ সালে। বগুড়া জেলা ভাগ হয়ে গেলে খুরশীদ আলমের জেলা হয়ে যায় জয়পুরহাট। তার বেড়ে ওঠা পুরান ঢাকার আলাউদ্দীন রোডে। তিন ভাই, দুই বোনের মধ্যে সবার বড় খুরশীদ আলম। তার বাবা এ এফ তসলিম উদ্দিন। ছোটবেলা থেকেই খুরশীদ আলমের সঙ্গীতের প্রতি আকর্ষণ ছিল বলে তিনি ঢাকায় বেড়ে ওঠেন এবং সঙ্গীতের মাধ্যমে তিনি সুনাম কুড়ান। তিনি সম্প্রতি একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন।

আহত খুরশীদ আলমের ছোট ভাই সাংবাদিক মুরর্শীদ আলম জানান, খুরশীদ আলম ঢাকা থেকে বগুড়া এসেছিলেন বগুড়াস্থ জয়পুরহাট কল্যাণ সমিতির সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় শহরের উপকণ্ঠ ঠেঙ্গামারাস্থ হোটেল মম ইন এ। শুক্রবার অনুষ্ঠান শেষে তিনি রাতে শহরের মধ্যে তার ভক্তদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও রাতের খাবার খেয়ে আবারও হোটেল মমইন এ ফিরছিলেন। ফেরার পথে রাত ৩টায় শহরের ঝোপগাড়িতে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তার প্রাইভেটকারকে চাপা দিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে শিল্পী খুরশীদ আলম ও তার ভক্ত খোকন (৪৫) আহত হন। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাদের।

শজিমেক হাসপাতালের নিউরো মেডিসিন বিভাগের ডাক্তার সুশান্ত কুমার জানান, খুরশীদ আলমের মুখের তিনটি দাঁত ভেঙে গেছে এবং মাথায় আঘাত লেগেছে। শুক্রবার ভোর ৪টায় তাকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়।

বগুড়া শজিমেকের নিউরো মেডিসিনের চিকিৎসক আসাফুদ্দৌলা জানান, মাথায় তিনটি সেলাই পরেছে। তিনটি দাঁত ভেঙে গেছে। আপাতত তিনি ভালো আছেন। তাকে শনিবার দুপুর ৩টার সময় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় নেয়া হয়। ঢাকার গ্রীন লাইফ হসপিটালে ভর্তি করা হয়। বগুড়ায় থেকে ঢাকা প্রেরণের সময় তার শরীরিক অবস্থা ভালো ছিল।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তি জানান, ঘটনার পরপরই সেখানে পুলিশ সদস্যরা পৌঁছে যায়। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় তাৎক্ষণিকভাবে। পালিয়ে যাওয়া ট্রাক আটক করার বিষয়ে পুলিশ সদস্যরা কাজ করছে।