জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক কর্মচারীর আত্মীয়কে মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে ছাত্রলীগের পাঁচ কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

রোববার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান।সাময়িক বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের কর্মীরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সঞ্জয় ঘোষ, ৪৫তম আবর্তনের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের মোহাম্মদ আল-রাজি, ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের রায়হান পাটোয়ারী, দর্শন বিভাগের মোকাররম শিবলু ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শাহ মুসতাক সৈকত।

প্রক্টর ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, সাময়িক বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের কর্মীরা পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না। এসময়ে তারা হলেও অবস্থান করতে পারবেন না। এছাড়া ছিনতাই ও মারধরের বিষয়ে তাদের পরিবারকে জানানো হয়েছে।

সাময়িক বহিষ্কারের পাশাপাশি ঘটনার অধিকতর তদন্তের জন্য ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এ টি এম আতিকুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে প্রক্টর বলেন, কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।ছাত্রলীগ কর্মীদের মারধরে আহত মনির সরদারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ছাত্রলীগ কর্মীদের মারধরে আহত মনির সরদারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় জাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে আমরাও সাংগঠনিকভাবে তদন্ত করে বহিষ্কারের পদক্ষেপ নিচ্ছি।গত শনিবার ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িচালক আলমগীর হোসেনের জামাতা মনির সরদার ছাত্রলীগের কর্মীদের হাতে মারধর ও ছিনতাইয়ের শিকার হন।

সেদিন মনিরের স্বজনদের বরাত দিয়ে প্রক্টর ফিরোজ বলেছিলেন, ভোরে মনির সরদার ঢাকার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে বিশমাইল এলাকার রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে সময় অভিযুক্ত ছাত্রলীগকর্মীরা তার সঙ্গে থাকা নগদ অর্থ ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়।মনির আত্মরক্ষার জন্য দৌড় দিলে অভিযুক্তরা তাকে ধরে বোটানিক্যাল গার্ডেনের পেছনে নিয়ে যায়। সেখানে মনিরকে মারধর করে তার স্ত্রীর কাছে ফোন করে এক লাখ টাকা দাবি করেন।খবর পেয়ে মনিরের স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সঞ্জয় ঘোষ, রায়হান পাটোয়ারী এবং আল রাজীকে আটক করে। ওই সময় পালিয়ে যান শাহ মুসতাক সৈকত ও মোকাররম শিবলু।

ঘটনার বিচার চেয়ে মনির সরদার ওইদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে শৃঙ্খলা কমিটির সভায় তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।