পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ফুল বিঝু আজ। করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর সংক্রমণ রোধে ও সরকারের নির্দেশনা মেনে কোনো রকম আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই যুগ যুগ ধরে চলে আসা ঐতিহ্যবাহী ফুল বিঝু উৎসব পালন করলো মহালছড়ির পাহাড়ি সম্প্রদায়। বৈসাবির প্রথম দিন ফুল বিঝু উৎসবের মধ্য শুরু হয় বৈসাবি । মারমা ভাষায় সাংগ্রাইং, ত্রিপুরা ভাষায় বৈসু, তঞ্চঙ্গ্যা ভাষায় বিষু এবং চাকমা ভাষায় বিজু’র সংক্ষেপিত রূপ হচ্ছে বৈসাবি।

প্রতি বছর ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পাহাড়ে শুরু হয় এই বৈসাবি উৎসব। আজকের দিনটিকে চাকমারা ফুলবিঝু, মারমারা পাইংছোয়াই, ত্রিপুরারা হারিবৈসুক নামে পালন করে। এই দিনে চাকমা সহ পাহাড়ে বসবাসরত বিভিন্ন সম্প্রদায় এই উৎসবে সামিল হয়ে ভোরে ঘুম থেকে উঠে বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ফুল সংগ্রহ করে। এরপর দলবেদে সবাই একসাথে নদীতে গিয়ে মা গঙ্গার উদ্দেশ্য ফুল ভাসায় পাহাড়িরা। দ্বীতিয় দিন মূল বিঝু ও তৃতীয় দিনে গোইজ্জ্যা-পোইজ্জ্যা দিন নামে পালন করে পাহাড়ের চাকমা সম্প্রদায়। মারমারা প্রথমদিন সাংগ্রাই, এরপরে আকে, এরপরে আতাদা নামে পালন করে। ত্রিপুরারা হারি বৈসু , বৈসুকমা ও বিসি কাতাল নামে পালন করে।

তিন দিন বিঝু উৎসব হলেও পাহাড়িরা এই উৎসব পালন করে সপ্তাহ জুড়ে। এই সপ্তাহ জুড়ে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায় নানা রকম ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান ও খেলাধুলার আয়োজন করে থাকে। ঘিলে খেলা, নাদেং খেলা, পানি খেলা সহ বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করে পাহাড়িরা। এই উৎসব শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়িদের হলেও উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পরে পাহাড়ি-বাংগালী সবার মধ্যে।

মিল্টন চাকমা কলিন, (মহালছড়ি)খাগড়াছড়ি