যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা ডা. ফেরদৌস খন্দকার প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন থেকে মুক্ত হয়েছেন বেশ কয়েকদিন হলো। কোয়ারেন্টিন থেকে মুক্ত হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি এই মুহূর্তে স্বাস্থ্য বিষয়ক ছোট্ট একটি সেটআপ করে দ্রুতই নিউইয়র্কে ফিরে যাবো। কারো বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই’।

অবশেষে নিউইয়র্কেই ফিরে গেলেন তিনি। মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অন্তত এক সপ্তাহ দেশে থাকার কথা জানালেও অজ্ঞাত কারণে পরদিন বুধবার রাতেই তিনি একটি বিশেষ বিমানে ঢাকা ত্যাগ করেন। এসময় তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘ধন্যবাদ বাংলাদেশ’।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবায় নিযুক্ত হয়ে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন তিনি। এক সময় প্রবাসীদের নিকট আস্থার নাম হয়ে ওঠেন ডা. ফেরদৌস। নিউইয়র্কে করোনার প্রকোপ কমে গেলে তিনি মাতৃভূমির জন্য কাজ করতে উদ্যোগী হন। নিজ আগ্রহে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশে আসেন।

ডা. ফেরদৌস খন্দকার নিউইয়র্ক থেকে উড়াল দেওয়ার পূর্বেই দেশে তার নামে নানা রটনা ছড়িয়ে পড়ে। তারপরেও তিনি চলে আসেন। তবে দেশের মাটিতে পা দিতেই তাকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন শেষ করে তিনি দেশের করোনা রোগীদের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেন। ‘অজ্ঞাত’ কারণে বাধাপ্রাপ্ত হন।

তাকে ‘বঙ্গবন্ধুর খুনির আত্মীয়’ হিসেবে বর্ণনা করে, অথবা ‘জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার’ অভিযোগ তুলে এক ধরনের প্রচার শুরু হয় ফেইসবুকে, যা তিনি বরাবরই অস্বীকার করে এসেছেন।

ডা. ফেরদৌস জানান, দেশে এসেছিলাম কয়েক সপ্তাহ দেশবাসীর জন্যে কাজ করবো বলে। সাথে ছোট্ট একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তুলে যাবো, এমন আশা ছিল। সেই লক্ষ্যেই দুই থেকে তিন সপ্তাহের জন্যে এসেছিলাম। যদিও সময় কিছুটা ক্ষেপন হয়ে গেছে। এরপরও আমি মনে করি, কোন আক্ষেপ নেই আমার।

কোয়ারেন্টিনের বিষয়ে ডা. ফেরদৌস বলেন, দেশে আসার পর আমাকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে দেয়া হয়েছে; এই বিষয়টি আমি প্রথম পাঁচদিন মানতেই পারছিলাম না। কেননা আমার এন্টিবডির সনদ ছিল। তখন মানসিকভাবে রীতিমতো বিদ্ধস্ত হয়ে পড়েছিলাম। পরিবার, সহকর্মী, বন্ধু, সুধীজন, ছাত্রলীগের সহযোদ্ধারা, সাংবাদিক এবং দেশের মানুষের সহায়তা ও সমর্থন আমাকে সাহস জুগিয়েছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশর মানুষকে সেবা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের সুপরিচিত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ফেরদৌস খন্দকার গত ৭ জুন বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়) ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। পরে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে কোয়ারেন্টিনে নিয়ে যায়। ঢাকার ব্র্যাক ট্রেনিং সেন্টারে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ছিলেন তিনি।