জোয়ার-ভাটা 

ও মাঝি! কোথায় যাও?
একখান কথা শুইনা যাও!
আরে ও মাঝি! বাঁকা চোখে কেন চাও
এদিক পানে চাওনা মাঝি
একখান কথা শুইনা যাও!

কি কথা কহিবা কইন্যা জলদি কইরা কও
বেলা তো ডুবিল ক্ষণে, ঘাটে ভিড়াইব নাও।

জোয়ারেতে টানো দাঁড়, ভাটায় কেন ভিড়াও?
ঐ পাড়েতে যামু মাঝি আমারে একটু লইয়া যাও!

জোয়ার ভাটার জীবন আমার, নদীতে পরান বাইন্ধা
কোন সুখে ভাসাই তরী………
কইন্যা যাও ফিরিয়া যাও, পশ্চিমে নামিল সইন্ধ্যা।

ও মাঝি আরে ও মাঝি, চলিলে কোথায়
আমার কথা তো শুইনা যাও?

এই বুঝি নামিল অান্ধার,, কলসে ভরিয়া জল
ফিরিয়া যাও গো কইন্যা, করিওনা ছল।

ছল জানিনে গো মাঝি, কেমনে করিবো ছল
দুই কুল হারা ভরা নদী আমার, চায় যে চোখের জল।

ও মাঝি, যার বুকে টানো দাঁড়, তার নাম কি গো মাঝি
আরে ও মাঝি! নদীর নাম কি মাঝি?
নদীর নাম তো কইয়া যাও!

আমার কাছে নদীর কোনো নাম নাই কইন্যা
সব নদীতেই জোয়ার ভাটা হয়
সব নদীর বুকেতেই মাঝি দাঁড় টানে
সব নদীরই একুল ভাঙে, অকুল গড়ে
নদী তো নদী কইন্যা,,নদীর আবার নাম কি গো!

আমার উত্তর তুমি দিলানা মাঝি!
ফিরিয়া যাও গো কইন্যা বেলা বইয়া যায়
অমন অট্টহাসি হাইসোনা মাঝি
পরান জ্বইলা যায়।

আরে ও মাঝি বেলা তো ডুবিয়াছে
চান্দের হাঁটে জোঁছনা উঠিয়াছে
যাইবা যদি যাও…..
সইন্ধ্যা হইলে পাখিরা কেন নীড়ে ফিরা আহে?
তা না হয় কইয়া যাও!

নীড় হারা পাখির ব্যাথা যদি কইন্যা জানিতে
অবেলায় নদীর ঘাটে, কইন্যা তুমি কি গো আসিতে!

আমি যে আপন নীড়ে নীড় হারাগো মাঝি
কূল যে আমার নাই, তোমার ঐ ছোট্ট নায়ে
মাঝি দিবা গো আমারে ঠাঁই?

– আমেনা ফাহিম