গাজীপুরে ঈদ বোনাস ও বেতন পরিশোধ এবং ঈদের ছুটি বাড়ানোর দাবীতে কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সোমবার বিকেলে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেছে। এসময় এক কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রায় আধাঘন্টা অবরোধ করেছে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর ইসলাম হোসেন ও স্থানীয়রা জানান, শ্রীপুর উপজেলার নয়নপুর এলাকার হংকং সাংহাই মাঞ্জেলা পোশাক কারখানার শ্রমিকরা গত কয়েকদিন ধরে কর্তৃপক্ষের কাছে ঈদ বোনাস ও জুলাই মাসের ১৫দিনের বেতন পরিশোধ এবং ঈদের ছুটি বাড়িয়ে ৩দিনের পরিবর্তে ১০দিন প্রদানের দাবী জানিয়ে আসছিল। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ এতে গড়িমসি করতে থাকে। এনিয়ে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে দাবী মেনে নেওয়ার জন্য শ্রমিকরা কারখানার ভিতরে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করে। কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হয়ে পার্শ্ববর্তী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপর অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে মহাসড়কের উভয়দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেয়। এতে প্রায় আধা ঘন্টা পর মহাসড়কের অবরোধ তুলে নিয়ে শ্রমিকরা কারখানা ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। পরে শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শেষে তাদের ঈদের ছুটি বাড়িয়ে ৫দিন এবং বেতন-বোনাস পরিশোধের ঘোষণা দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ। এতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

এদিকে শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, শ্রীপুরের মুলাইদ এলাকার হাসিন সুয়েটার পোশাক কারখানার শ্রমিকরা একই দাবীতে বিকেল ৪টার দিকে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা শান্ত হয়। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে মালিকপক্ষের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। কারখানা কর্তৃপক্ষ আলোচনা শেষে শ্রমিকদের ঈদের ছুটি বাড়িয়ে ৭দিন এবং তাদের বেতন-বোনাস পরিশোধের ঘোষণা দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

অপরদিকে একই দাবীতে গাজীপুর মহানগরের মুদাফা এলাকার মজুমদার পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিকেলে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করে। গত কয়েকদিন ধরে তারা ঈদ বোনাস ও বেতন পরিশোধ এবং ঈদের ছুটি বাড়ানোর দাবী জানিয়ে আসছিল। কিন্তু দাবী মেনে না নেওয়ায় শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করে। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত শ্রমিকরা কারখানা এলাকায় অবস্থান করে বিক্ষোভ করছিল বলে জানিয়েছেন শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর ইসলাম হোসেন।