করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরও গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করা ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর (এস এস) ভদ্রকে চাকরি থেকে বরখাস্ত এবং এ বিষয়ে কমিটি গঠন করে তদন্তের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী। নোটিশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিবাদীদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কোনো পদক্ষেপ না নিলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও নোটিশে বলা হয়।

নোটিশে বলা হয়েছে, গত ১৪ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫ তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট, ডাটা কার্ড উম্মোচনের উদ্বোধনী কাজে গণভবনে যান সুধাংশু শেখর ভদ্র। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর অনেক কাছাকাছি অবস্থান করেন। কিন্তু সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর ২৬ ধারা অনুযায়ী তার কর্মকাণ্ড একটি অপরাধ এবং ওই আইন অনুযায়ী তিনি তার তথ্য গোপন করেছেন যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এতে আরো বলা হয়, ‘বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ১২ আগস্ট আইইডিসিআর করোনা পরীক্ষার জন্য এসএস ভদ্রের নমুনা সংগ্রহ করে এবং ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় ওই রিপোর্ট তাকে প্রদান করে। যে রিপোর্ট অনুযায়ী তার করোনা পজিটিভ ছিল। কিন্তু ওই রিপোর্টের তথ্য গোপন করে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবেশ করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর খুব কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। যা বেআইনি শুধু নয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যের জন্য চরম ঝুঁকি বহন করে।’

নোটিশে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু আগস্ট মাস একটি শোকের মাস এই মাসে বাংলাদেশের ইতিহাসে বিভিন্ন বর্বরতম হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করবার জন্য বারবার স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এই আগস্ট মাসকে বেছে নিয়ে থাকে। এমন একটি পরিস্থিতিতে একজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর কাছাকাছি যাওয়ার উদ্দেশ্য সম্পর্কে দেশবাসীর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কেন এবং কোন উদ্দেশ্যে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলেন, সেই বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া জাতীয় স্বার্থেই প্রয়োজন। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা কার্যকরী সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে এবং সেটাও প্রশ্নবিদ্ধ।’

‘বিষয়টির তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। এসব বিষয় উল্লেখ করে এই বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করার জন্য এবং এসএস ভদ্রকে ২০১৮ সালের আইন অনুযায়ী বিচারের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি দেওয়ার অনুরোধ করা হলো। একইসঙ্গে তদন্ত চলাকালীন সময়ে তাকে তার চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার জন্য অনুরোধ করা হলো। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার বিষয়ে কোন কোন জায়গায় ঘাটতি রয়েছে সেগুলো চিহ্নিত করে সংস্কারের জন্য অনুরোধ করা হলো।’