নওগাঁ -৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম গত ২৭ জুলাই মৃত্যুবরণ করায় এ আসনটি শূন্য হয়েছে। এ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রায় ৩ ডজন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই নিজেদের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করলেও এলাকাবাসী রয়েছেন দুশ্চিন্তায়।

এই আসনের ভোটাররা বলছেন যোগ্য ব্যাক্তকে নির্বাচিত না করতে পারলে আবারও উত্তপ্ত হতে পারে এই নির্বাচিত এলাকা। জাতীয় পার্টিও ছেড়েছে মনোনয়ন ফরম। আর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে বিএনপি।
নওগাঁ – ৬ আসনের উপ-নির্বাচন ঘিরে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় ৩৪ জন নেতাকর্মীরা। তবে নৌকার প্রার্থী হিসেবে ত্যাগী ও পরীক্ষিত আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধ নওশের আলীর নাম আলোচনার শীর্ষে। এ আসনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে দীর্ঘ সময় ধরে অবদান রাখা এ ব্যবসায়ী নেতাকে এবার মূল্যায়ন করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন স্থানীয়রা।

রাণীনগর থানা আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সভাপতি এবং রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ এর সহ-সভাপতি ছিলেন নওশের আলী পিতা ছাবের আলী প্রমানিক। নওশের আলীর জন্ম ১৯৫২ নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামে। ব্যক্তিগত জীবনে দুই ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে তিনি সবার বড় এবং ৪ কন্যা সন্তানের জনক। বর্তমানে রাজশাহীর কাদিরগঞ্জ দড়িখরবোনায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ত্রাণ সহায়তাসহ নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি প্রশংসিত।
নওশের আলী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা-ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি লাভ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ৭ নং সেক্টরের ৩ নং সাব-সেক্টর (মহদিপুর সাব-সেক্টর) কমান্ডার বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের অধিনে মর্টার প্লাটুন কমান্ডার, এম.এফ.সি এবং আর্টিলারি ও.পি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

রাজনীতিতে ১৯৬৫ সালে ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেন। ১৯৭১ সালে রাণীনগর থানা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য, ১৯৭২ সালে রানীনগর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি, ১৯৭৩ সালে রাণীনগর থানা যবুলীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৭৪ সালে রাণীনগর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৯৯১ সালে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, ১৯৯৭ সাল হতে ২০১৫ সাল (পরপর ৩ মেয়াদে) রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ২০১৫ সাল হতে ১ মার্চ, ২০২০ পর্যন্ত রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ এর সহ-সভাপতি (১ মার্চ, ২০২০ তারিখ রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের পর মহামারীর কারণে কমিটি গঠিত হয় নাই। সাবেক কমিটি দ্বারা দলীয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে)। ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁ-৬, (রাণীনগর-আত্রাই) আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন প্রার্থী ছিলেন তিনি। দলকে সুসংগঠিত করতে ও এই অঞ্চলের শাক্তি বজায় রাখতে নওশের আলীকে মনোনয়ন দেওয়া সঠিক সিদ্ধান্ত হবে বলে অনেকের মত। জনপ্রিয়তার বিচারেও পরিশ্রমী, সহজ-সরল, বিনয়ী ও মিষ্টভাষী এবং মিশুক নওশের আলী এগিয়ে রয়েছেন বলে স্থানীয় লোকজনের ধারণা।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও নওগাঁ জেলার সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন জলেন, জাতীয় পার্টিও ছেড়েছে মনোনয়ন ফরম। যোগ্য ব্যক্তিতে মনোনয়ন দিয়ে এই আসনটি নির্বাচনের মাধ্যমে এই আসনটি নেয়া হবে নিজেদের দখলে। আর বিএনপি বলছেন কেন্দ্র সিদ্ধান্ত দিলে ও সুষ্ঠ্য নির্বাচন হলে এই আসনটি আসবে তাদের দখলে। যোগ্য ব্যাক্তকে নির্বাচিত করে এই এলাকে জঙ্গি মুক্ত না রাখতে পারলে আবারও হতে পারে উত্তপ্ত। এমনটিই আশংকা করছেন নওগাঁবাসী।

মোঃ খালেদ বিন ফিরোজ