কলাপাড়ায় মাসের পর মাস দফায় দফায় ও লাগাতার শারিরীক ও নির্মম নির্যাতন করেছে যৌতুকলোভী স্বামী। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শিশু কণ্যা সন্তানকে নিয়ে প্রচন্ড যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে নির্যাতীতা স্ত্রী তুলি, পা থেকে মাথা পর্যন্ত থেতলে দেয়া হয়েছে। নাকে-চোখে-মুখে ঘুষি দিয়ে চোখ এবং ঠোট ফাঠিয়ে-ফুলিয়ে দেয়া হয়েছে, ফাটানো ঠোটে সেলাই লেগেছে ১২/১৩টি । দিনভর চলে এই নির্যাতন। নির্যাতনের যন্ত্রনা সইতে না পেরে এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এক সন্তানের মা-গৃহবধু তুলি বেগম (২২)। মঙ্গলবার রাতে এলাকাবাসী পুলিশের সাহায্য নিয়ে গৃহবধুকে উদ্ধার করে কলাপাড়া হাসপাতাপালে ভর্তি করেন। ঠোট ফেটে যাওয়ায় কথা বলার শক্তি নেই গৃহবধুর। সাংবাদিক দেখে গৃহবধু ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে তার পাষন্ড স্বামী শাহাবদ্দিনের নির্মম নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন। ত্রিশ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে গৃহবধু তুলিকে ঘরে আটকে দিনভর পৈশাচিক ও মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে পাষন্ড স্বামী শাহাবুদ্দিন গাজী। বর্তমানে গৃহবধু কলাপাড়া হাসপাতালে নারী ও শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন।

স্থানীয়ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সাত বছর পূর্বে ধানখালী ইউনিয়নের গন্ডামারি গ্রামের শাহবুদ্দিনের সাথে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী গলাচিপার পক্ষিয়া গ্রামের জাকির গাজীর মেয়ে তুলির সাথে। বিয়ের কিছুদিন পরই বিভিন্ন অজুহাতে যৌতুকের দাবিতে তুলিকে নির্যাতন করে শাহাবুদ্দিন। এর মধ্যে তাদের কোল জুড়ে আসে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তান। সন্তান জন্মানো পর থেকেই বাড়তে শুরু করে নির্যাতনের বহুমুখী-মাত্রা। বেঁচে থাকা ও একটু সুখের আশায় অনেকবারই বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিলেও চাহিদা কমেনি স্বামী শাহাবুদ্দিনের। সবশেষ মঙ্গলবার কলাপাড়ার পক্ষিয়া গ্রামের স্বামীর বাড়িতে বসে দিনভর ও লাগাতার শারিরীক নির্যাতন করা হয় তুলিকে।

এ বিষয়ে শাহাবুদ্দিনের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ ঘটনায় (এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত) এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

রাসেল কবির মুরাদ , কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি