গত ২৪ জুলাই রাজধানীর পল্টন এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় জেএমবি’র সঙ্গে সম্পৃক্ততা সন্দেহে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে কলেজ ছাত্রসহ চার যুবককে গ্রেফতার করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাদেরকে আটকের প্রায় এক মাস পর ১০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর উত্তরার আজমপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে দাবী করেছেন গ্রেফতারকৃতদের স্বজনরা।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শেখ মামুন আল মুজাহিদ ওরফে সুমন (২৭), সারওয়ার হোসেন (২৪), আল-আমিন (২৫) ও মুজাহিদুল ইসলাম রোকন (২৬)।

সোমবার দুপুরে গাজীপুর শহরে একটি পত্রিকা অফিসে সংবাদ সম্মেলনে যুবকদের বাবা-মাসহ কয়েক স্বজন ওইসব তথ্য জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে সুমনের বাবা শ্রীপুর থানা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ মোসলেম উদ্দিন আহমেদ ওরফে মোসলেম মাষ্টার ও মা মাহমুদা বেগম জানান, আমাদের ছেলে সুমন ঢাকার তিতুমীর কলেজে ইংরেজীতে স্œাতক (সম্মান) শ্রেনীতে লেখাপড়া করে। ১৭ আগস্ট দিবাগত রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে কিছু সংখ্যক ব্যক্তি শ্রীপুরের বাসা থেকে সুমনকে তাদের গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায়। পরে প্রায় ১মাস ধরে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক খোঁজাখুজি করেও তার কোন সন্ধান পাইনি। গত ১১ সেপ্টেম্বর একটি অনলাইন মিডিয়ায় ((বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম) প্রকাশিত খবর ও ছবি দেখে জানতে পারি তারা গত বৃহস্পতিবার বাতে (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর উত্তরার আজমপুর এলাকা থেকে ২৪জুলাই পল্টন থানার বোমা বিস্ফোরণে জড়িত সন্দেহে নব্য জেএমবি সদস্য হিসেবে সুমনসহ ওই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু আমার ছেলে কোন ভাবেই অন্যায় বা ওইসব জেএমবি তৎপরতার সঙ্গে জড়িত নয়। আমার পরিবারের সদস্যরা মনে প্রাণে মুক্তিযুদ্ধ স্বপক্ষের শক্তি আওয়ামীলীগের কর্মী ও সমর্থক। অথচ আমার মেধাবী ছেলেকে জেএমবি সদস্য সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে যেন মিথ্যা কোন অভিযোগে ও অন্যায় ভাবে হয়রানি না করা হয়, তারজন্য সংশ্লিষ্টদের নিকট তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে একই কথা জানান, গ্রেফতারকৃত আল আমিনের মা মাহমুদা বেগম ও স্ত্রী স্বপ্না বেগম, রাহাতের বাবা লিটন মিয়া ও মা নাসিমা বেগম।

ডিএমপি’র পল্টন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেন্টু মিয়া সাংবাদিকদের জানান, বোমা বিষ্ফোরণের ঘটনায় পল্টন থানার মামলা দায়ের হলেও ওই মামলার তদন্ত করছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। তাই ওই মামলার বিস্তারিত বিষয়ে তিনি বলতে পারেননি।

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম এ ব্যপারে জানান, ইতোপূর্বে সিলেট থেকে গ্রেফতার হওয়া এক আসামির দেয়া সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সুমনসহ চারজনকে ১০ সেপ্টেম্বর রাতে আজমপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কমিউনিকেশন অ্যাপের মাধ্যমে জেএমবি সদস্যদের সঙ্গে সুমন নিয়মিত যোগাযোগ চেটিং করতো এবং জঙ্গি তৎপরতা চালাতো। বাকীদেরও সুমন তার নিজের কাজের জন্য তৈরী করেছে। সুমনের বিরুদ্ধে আরও ১২টি মামলা রয়েছে।