চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরের ওপারে ভারতের মহদীপুর স্থলবন্দরে আটকেপড়া ৪০০ ট্রাক পেঁয়াজে পচন ধরেছে। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে নাসিক থেকে অনেক আগেই এলসি করা আরও ১ হাজার ট্রাক পেঁয়াজ মহদীপুর বন্দরে পৌঁছাতে শুরু করেছে। সোনামসজিদ স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলুল হক বৃহস্পতিবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গত সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) থেকে এলসি করা প্রায় ৪০০ ট্রাক পেঁয়াজ ওপারে মহদীপুর স্থলবন্দরে এসে পৌঁছায়। পরদিন মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ওই ট্রাকগুলো এপারে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ঢোকার কথা ছিল। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের পর সেখানে আটকাপড়ে আছে।

ফজলুল হক আরও বলেন, মঙ্গল ও বুধবার মহদীপুর বন্দর এলাকায় দিনে কয়েকদফা বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পরই আবার রোদ। এতে ট্রাকবোঝাই পেঁয়াজে পানি ঢুকে পচন শুরু হয়েছে। আরও দুইদিন যদি সেখানে পেঁয়াজ আটকে থাকে, তবে ট্রাকের সব পেঁয়াজ পচে নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, অনেক দিন আগেই এলসি করা আরও ১ হাজার ট্রাক পেঁয়াজ আজ (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে মহদীপুর স্থলবন্দরে আসতে শুরু করেছে। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত পেঁয়াজ বোঝাই প্রায় ৫০০ ট্রাক মহদীপুরে এসেছে। সন্ধ্যা নাগাদ ১ হাজার ট্রাক পেঁয়াজ পৌঁছে যাবে।

অর্থাৎ আগের ৪০০ ট্রাকসহ মোট ১ হাজার ৪০০ ট্রাক পেঁয়াজ নিয়ে শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। কারণ ভারত সরকার পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে দেওয়ায় মহদীপুর থেকে ছাড় না হওয়ায় সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ঢুকতে পারছে না ট্রাকবোঝাই পেঁয়াজ।

সোনামসজিদ স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুর রহমান বাবু বলেন, অনেক আগেই এসব পেঁয়াজের বিশাল চালানের এলসিসহ আমদানির সব কাজ সম্পন্ন করা হয়েছিল। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের দেওয়া অর্ডারের পেঁয়াজ এখন ভারতের অভ্যন্তরেই পচতে শুরু করেছে। যদি আগামী দু’একদিনের মধ্যে আগের এলসি করা পেঁয়াজ ছাড় না করা হয়, তবে প্রায় ৩০ কোটি টাকার লোকসানের মুখে পড়বে সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি করা ব্যবসায়ীরা।

এদিকে, ভারতের মহদীপুর স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হৃদয় ঘোষ ও স্থলবন্দরের এজেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ভূপতি মন্ডল ভারতীয় জি২৪ঘণ্টাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের হটকারী সিদ্ধান্তে অর্ধশত কোটি টাকার পেঁয়াজ পচে নষ্ট হচ্ছে। এলসি করা পেঁয়াজ ট্রাকেই রাখা হবে। এটা তো আর ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। ফলে সরকার আগের এলসি করা পেঁয়াজ দ্রুত ছাড় করতে অনুমতি না দিলে অযথা পড়ে থেকে নষ্ট হবে।