নওগাঁ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনিত হয়েছে। জেলার প্রধান নদী আত্রাই ও ছোট যমুনা নদীর পানি একটি পয়েন্টে কমলেও অন্য সবগুলো পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়েছে। আত্রাই ও মান্দা উপজেলার উপদ্রুত ১০টি ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনিত হয়েছে। নতুন নতুন বাড়িঘর এবং ফসলের মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। ছোট যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে শহররক্ষা প্রাচীরের আউটলেট দিয়ে শহরের ভিতরে পানি ঢুকে পড়েছে।

নওগাঁ পানি উন্নয়নর বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ উজ্জামান খান জানিয়েছেন ,আত্রাই ও যমুনা নদীর পানি একটি পয়েন্টে কমলেও অন্য সব পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাঁর দেয়া তথ্য অনুযায়ী আত্রাই নদীর পানি ধামইরহাট উপজেলার শিমুলতলী পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার কমে এখন বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে আত্রাই নদীর মহাদেবপুর পয়েন্টে ৮ সেন্টমিটার বৃদ্ধি পেয়ে এখন বিপদসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার উপরে রয়েছে।, মান্দা উপজেলায় জোতবাজার পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে এখন ৮৮ সেনিটমিটার উপর দিয়ে এবং আত্রাই রেলওয়ে ষ্টেশন পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে এখন ৩৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে নওগাঁ ছোট যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘন্টায় বুধবার সকাল ৯টায় ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং নাগর নদীর পানি বগুড়ার তালোরা পয়েন্টে ১৫ সেনিটমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ছোট যুমনা নদীর বাঁধ বদলগাছি ও সদর উপজেলার বেশ কয়েককটি স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

এদিকে নওগাঁ ছোট যমুনা নদীতে তৈরী শহর রক্ষা প্রাচীরের আউটলেট দিয়ে শহরে পানি প্রবেশ করেছে। শহরের উকিলপাড়া, পুরাতন কালেক্টর ভবন চত্বর, সুপারিপট্টি এবং বিজিবি ক্যাম্পে পানি ঢুকে পেড়েছে।

নওগাঁ’র কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ শামসুল ওয়াদুদ জানিয়েছেন ,বন্যায় এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৫শ ৭ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্র্ণভাবে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে রোপা আমন ধান ৫ হাজার ৪শ ১১ হেক্টর এবং ৯৬ হেক্টর বিভিন্ন জাতের শাকসব্জি। তলিয়ে যাওয়া রোপা আমন ধানের মধ্যে আত্রাই উপজেলায় ১ হাজার ৫শ ৩০ হেক্টর, মান্দা উপজেলায় ১ হাজার ৫শ ২০ হেক্টর, রানীনগর উপজেলায় ৮শ ৭০ হেক্টর এবং সদর উপজেলায় ৪শ ৮০ হেক্টর।

নওগাঁ’র জেলা প্রশাসক মোঃ হারুন-অর-রশীদ বলেছেন ইতিমধ্যেই বন্যা দুর্গত পরিবারগুলোকে সরকারী সহযোগিতার আওতায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী স্ব স্ব উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের অনুকূলে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেগুলো বিতরণরে কার্যক্রম চলছে।