গাজীপুরের পূবাইলে পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রির জেরে চোখে-মুখে মরিচের গুড়ো ছিটিয়ে ও কুপিয়ে কালাম ও তার স্ত্রীকে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। চাঞ্চল্যকর খুনের এ ঘটনায় জড়িত থাকায় নিহত কালামের ভাগ্নি জামাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছেন গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান।

গ্রেফতারকৃতের নাম পলাশ (২৩)। সে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পূবাইল সাপমারা এলাকার মোঃ ইদ্রিস আলীর ছেলে।

গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, গাজীপুর মহানগর পূবাইল থানাধীন বসুগাঁও এলাকার চাঞ্চল্যকর আবুল কালাম (৩৭) ও তার স্ত্রী পুতুলকে (৩০) এলোপাথারীভাবে কুপিয়ে খুন করার ঘটনায় জড়িত থাকায় নিহত কালামের ভাগ্নি জামাই পলাশকে (২৩) রবিবার ভোরে সাপমারা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত পলাশ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এর প্রেক্ষিতে ঘটনার প্রায় এক বছর পর গাজীপুরের চাঞ্চল্যকর কালাম-পুতুল দম্পতি খুনের রহস্য উন্মোচন হয়েছে।

তিনি গ্রেফতারকৃত পলাশ স্বীকারোক্তিকালে লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণণা দিয়ে জানান, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে সহযোগিদের নিয়ে পলাশ তার মামা শ্বশুর কালামের বাড়িতে যায়। তারা কালামকে কৌশলে ঘুম থেকে ডেকে উঠায়। কালাম ও তার স্ত্রী ঘরের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে তাদের চোখে-মুখে মরিচের গুড়ো ছিটিয়ে দেয় তারা। এসময় দু’বছরের শিশু সন্তানের সামনে তার বাবা-মাকে ধারালো চাপাতি দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্নস্থানে এ জায়গায় এলোপাথারীভাবে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় পলাশ ও তার সহযোগিরা। পলাশের শ্বাশুরীর পৈত্রিক সম্পত্তি উপর নির্মিত ঘর ও জমি তার মামা শ্বশুর আবুল কালাম ও খালা শ্বাশুরী মোসাঃ হেলেনা বিক্রির জন্য বায়না করে। পরবর্তীতে ওই জমি ক্রেতার সঙ্গে যাতে রেজিষ্ট্রি করতে না পারে সেজন্য কালাম ও তার স্ত্রীকে খুন করা হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক মোঃ হাফিজুর রহমান জানান, ঘটনার পরদিন সকালে নিহত দম্পতির দুই বছরের শিশু সন্তানের কান্না শুনে প্রতিবেশী এক নারী এগিয়ে যান। এসময় তিনি শিশুটিকে তার নিহত বাবা-মায়ের রক্তে গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় পরদিন নিহত কালামের বোন মোসাঃ হেলেনা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে জিএমপি’র পূবাইল থানায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে এ ঘটনায় তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পুলিশ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত পলাশ ও তার শ্বশুর মানিক (৪৭) (নিহত কালামের ভগ্নিপতি)সহ ৪জনকে এ পর্যন্ত গ্রেফতার করেছে।