কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত অর্ধশত রোহিঙ্গা। মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কুতুপালং ক্যাম্প-১-এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ক্যাম্প ইনচার্জ খলিলুর রহমান জানান, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে কমপক্ষে চারজন নিহত হন। এছাড়া আহত হন অর্ধশতাধিক।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছু দ্দৌজা বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কুতুপালং ক্যাম্পে নতুন ও পুরাতন রোহিঙ্গাদের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৪ ও ৫ অক্টোবর তিন জন রোহিঙ্গা হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

মঙ্গলবার সকালে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে নয় জন রোহিঙ্গা ডাকাতকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করে। এদিন সন্ধ্যা থেকে আবারও রোহিঙ্গাদের দুই গ্রুপে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ ও এপিবিএন সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, কুতুপালংয়ের নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের একটি গ্রুপ ও অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। গত দুই দিনে খুন হয়েছে আরো ৩ জন। সোমবারও কুতুপালং ক্যাম্পে মোহাম্মদ ইয়াছিন (২৪) নামে এক রোহিঙ্গা যুবক খুন হয়। এর আগে গত ৪ অক্টোবর ভোররাতে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুই রোহিঙ্গা নিহত হয়। এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর একইভাবে সংঘর্ষে ১৫ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা আহত হয়েছে।

রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা খুন, ধর্ষণ, মাদক পাচার, অস্ত্র ও স্বর্ণ ব্যবসায় মতো মতো অসংখ্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। বিশেষ করে মাদক ও অস্ত্র ও স্বর্ণ ব্যবসা নিয়ে অভ্যন্তরীণ বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। প্রতিরাতেই ক্যাম্পগুলো থেকে ভেসে আসে গুলির শব্দ। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের মধ্যে ঘটা সশস্ত্র সংঘর্ষ থেকে প্রাণে বাঁচতে কয়েক’শ রোহিঙ্গা কুতুপালং ক্যাম্প ছেড়ে অন্য ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। ক্যাম্পের ভেতরের দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন।