গাজীপুরে কাজ ছেড়ে চলে যেতে বাঁধা দেওয়ায় বন্ধুকে খুন করেছে তার সহকর্মী এক শ্রমিক। চাঞ্চল্যকর খুনের এ ঘটনায় নিহতের বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বুধবার বিকেলে এ তথ্য জানিয়েছেন গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান। গ্রেফতারকৃতের নাম নুর জামাল মাতুব্বর (২১)। সে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার বড়পাল্লা আব্দুল্লাহবাদ এলাকার মজিবর মাতুব্বরের ছেলে।

গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, গত ২১ জানুয়ারি গাজীপুর মহানগরীর ইস্পাহানী ফুড লিঃ কোম্পানীর নব নির্মিত ফ্যাক্টরী বিল্ডিং-৩ এর নিচ তলার কক্ষ থেকে মাইন উদ্দিন (১৮) নামের এক নির্মাণ শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত মাইন উদ্দিন ফরিদপুর জেলা সদর থানার ইব্রাহিম মুন্সিকান্দি এলাকার ইউসুফ শেখের ছেলে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় নিহতের বন্ধু নুর জামাল মাতুব্বরকে ঘটনার প্রায় ৬ মাস পর মঙ্গলবার গভীর রাতে বরগুনা জেলার বেতাগী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই। এসময় তার কাছ থেকে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃত জামাল বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

তিনি জানান, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকাস্থিত ইস্পাহানী ফুড লিঃ কোম্পানীর নব নির্মিত ফ্যাক্টরী বিল্ডিং-৩ এর মেটাল ক্যানোপির কাজের শ্রমিক ছিলেন মাইন উদ্দিন ও তার বন্ধু নুর জামাল মাতুব্বর। তারা কারখানা ভবনের নীচতলায় রাত্রি যাপন করতেন। ঘটনার আগের দিন নির্মাণাধীন ভবনের একটি সেড তৈরী করতে ভুল করায় জামাল মাতুব্বরের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন ঠিকাদার সফিক। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কাজ ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জামাল। ২১ জানুয়ারি রাত ১১টার দিকে চলে যাওয়ার সময় জামালকে বাঁধা দেয় তার বন্ধু মাইন উদ্দিন। এতে দু’জনের মাঝে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। শরীরের বিভিন্নস্থানে ঘুষি মেরে মাইন উদ্দিনকে রুমে থাকা লোহার এঙ্গেলে ফেলে দেয় জামাল। এতে তার গলা কেটে যায়। এসময় মাইন উদ্দিন ডাক চিৎকার শুরু করলে মুখ ও গলা চেপে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে জামাল। পরে নিহতের দুইটি মোবাইল সেট নিয়ে দেওয়াল টপকিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় জামাল। ভাঙ্গা থাকায় পথে একটি মোবাইল ফেলে দেওয়া হয়।

খুনের এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে জিএমপি’র কাশিমপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনার প্রায় ৬মাস পর মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নুর জামাল মাতুব্বরকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিহতের ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার তাকে আদালতে হাজির করা হলে সে আদালতে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্ধি প্রদান করে। আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেছে।