করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় শিগগিরই অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম। আজ বুধবার একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, অ্যান্টিজেন পরীক্ষার জন্য প্রাথমিকভাবে দুই লাখ কিট দুয়েকদিনের মধ্যেই পাওয়া যাবে বলে তারা আশা করছেন; এরপর শুরু হবে পরীক্ষা।

অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সিএমএসডির মাধ্যমে আরও দুই লাখ কিট সংগ্রহ করছি। এগুলো এখনো হাতে এসে পৌঁছায়নি, হয়তো আজকালের মধ্যে পৌঁছাবে। এ ছাড়া ইউএনএফপিএ থেকে আমাদেরকে ১০ লাখ কিট দেওয়ার কথা রয়েছে। আশা করছি দুয়েকদিনের মধ্যেই পরীক্ষাও শুরু করা যাবে।’

যেসব জেলায় আরটি-পিসিআর ল্যাব নেই, সেসব জেলায় আগে অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু করা হবে বলে জানান খুরশীদ আলম। এ ছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসার জন্য আসা রোগীদেরও অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হবে। তিনি বলেন, ‘বড় বড় মেডিকেলগুলোয় যেখানে জরুরি সেবা চালু আছে, সেখানে রোগীকে দ্রুত পরীক্ষা করে ফলাফল জানা দরকার। এখন এক সপ্তাহ ধরে অপেক্ষা করতে হয় টেস্টের জন্য। অপেক্ষা করে দেখা যায় হাসপাতালে থেকেই রোগীরা সংক্রমিত হয়ে যায়। এ কারণে সেখানেও এই পরীক্ষা চালু হবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, বেসরকারি হাসপাতালেও অ্যান্টিজেন টেস্টের অনুমতি দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। তবে সেক্ষেত্রে একটি ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘ফি আমরা এখনো নির্ধারণ করিনি। তবে আমরা চিন্তা করছি আরটিপিসিআর টেস্ট করতে যে টাকা নেওয়া হয়, ওই একই পরিমাণ টাকা নেওয়া হবে। এর চেয়ে বেশি টাকা দেওয়ার সুযোগ নেই।’

কারও দেহে সংক্রমণ ঘটেছে কি না, তা দ্রুততম সময়ে জানার পদ্ধতি হলো অ্যান্টিজেন টেস্ট। এজন্য নাক বা মুখ গহ্বর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (আরটি-পিসিআর) পদ্ধতি সংক্রমণ শনাক্তে বিশ্বে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত। তবে এই পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহের পর ফল পেতে বেশ সময় লেগে যায়, সেখানে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে আধা ঘণ্টার মধ্যে জানা যায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছে কি না।

গত মার্চে বাংলাদেশে সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এই পর্যন্ত শুধু আরটি-পিসিআর টেস্টই চলে আসছিল। তবে পরীক্ষায় গতি আনতে অ্যান্টিজেন টেস্টের পক্ষে বলে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা। গত ১৭ সেপ্টেম্বর করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় অ্যান্টিজেন টেস্টের অনুমোদন দেয় সরকার। সেদিন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের চিঠিতে বলা হয়, অতি স্বল্প সময়ে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য সারা দেশে অ্যান্টিজেন টেস্টের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রস্তাব এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১১ সেপ্টেম্বরের ‘ইনটেরিম গাইডেন্স’ অনুসরণ করে দেশের সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, সরকারি পিসিআর ল্যাব এবং সব স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে অ্যান্টিজেনভিত্তিক টেস্ট চালুর অনুমতি দেওয়া হলো।