গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি মানবতা বিরোধী অপরাধে ফাঁসিতে মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামি মাহবুবুর রহমান (৭২) শুক্রবার মারা গেছেন। তিনি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার রাইনহাটি এলাকার মৃত আবদুল ওয়াদুদের ছেলে।

কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খান জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসিতে মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী মাহবুবুর রহমানকে ২০১৯ সালের ২০ জুলাই এ কারাগারে পাঠানো হয়। এ কারাগারের তার কয়েদি নং-৪৪১২/এ ছিল। তিনি ডায়াবেটিকস ও হার্টেরসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। তিনি শুক্রবার ভোররাতে কারাগারে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। তাকে প্রথমে কারা হাসপাতালে পরে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৫ টার ৪০ মিনিটের দিকে মারা যান তিনি। কারা বিধি অনুযায়ী আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, ’৭১ এ মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা ও তার ছেলেসহ সাতজনকে হত্যার ঘটনায় ২০১৯ সালের ২৭ জুন মাহবুবুর রহমানকে ফাঁসিতে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেন আদালত। তার বিরুদ্ধে আটকে রেখে নির্যাতন, হত্যা, অপহরণ ও গণহত্যার তিনটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। তিন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই দন্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

রণদা প্রসাদ সাহার পৈতৃক নিবাস ছিল টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে। সেখানে তিনি একাধিক শিক্ষা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এক সময় নারায়ণগঞ্জে পাটের ব্যবসায় নামেন রণদা প্রসাদ সাহা। তিনি নারায়ণগঞ্জের খানপুরের সিরাজদিখানে থাকতেন। সে বাড়ি থেকেই তাকে, তার ছেলে ও অন্যদের ধরে নিয়ে যান আসামি মাহবুবুর রহমান ও তার সহযোগীরা।

যুদ্ধাপরাধী মাহবুবুর রহমানের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মুক্তিযুদ্ধের সময় মির্জাপুর শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন। মাহবুবুর রহমান ও তার ভাই আব্দুল মান্নান সে সময় রাজাকার বাহিনীতে ছিলেন। মাহবুবুর রহমান একটা সময় জামায়াতে ইসলামির সমর্থক ছিলেন।