দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের মধ্যসুলতানপুর গ্রামে গতকাল শুক্রবার সকাল ৯ টায় ফুল মালা ওরফে মালা আক্তার ওরফে ফারজানা (১৬) নামের এক কিশোরী গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু ঘটেছে।

পরিবারের লোকজনের দাবি ফুল মালা ওরফে মালা আক্তার ওরফে ফারজানা নিজ ঘরের মধ্যে সকলের অলক্ষ্যে দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘরের বর্গার সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। থানা পুলিশকে খবর না দিয়েই নিজেরাই মরদেহ নামিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে দাফন-কাফনের জন্য মরদেহকে গোসল করিয়ে রাখেন।

পরে ফুলবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন।

নিহত ফুল মালা ওরফে মালা আক্তার ওরফে ফারজানা ওই গ্রামের কিশোর নূরুন নবীর স্ত্রী এবং কুঁড়িগ্রামের ইসমাইল হোসেনের মেয়ে। গত এপ্রিল মাসে তাদের বিয়ে হয়েছিল। সম্পর্কে তারা খালাতো ভাই-বোন ছিলেন। বিয়ের আগে ফুল মালা ওরফে মালা আক্তার ওরফে ফারজানা ঢাকায় একটি গার্মেন্টেসে চাকরি করতেন।

নিহতের শ্বাশুড়ি আমেনা বেগম বলেন, সকালে পরিবারের লোকজন নাস্তা খেয়ে যেযার মতো করে কাজে চলে যায়। তিনিও গরুর ঘাস কাটতে জমিতে যান। বাড়ীতে একাই ছিলেন তার ছেলেবউ ফুল মালা। সকাল ৯ টা দিকে ঘাস নিয়ে বাড়ীতে ফিরে দেখে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ। ডাকাডাকি করেও ছেলেবউয়ের কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের খবর দেন। এ সময় হালিম নামের এক প্রতিবেশিসহ অন্য একজন ঘরের টিনের চালা ভেঙ্গে ঘর থেকে ফুলমালার মরদেহ নামিয়ে বারান্দায় রাখেন। তার মাথায় একটু গন্ডোগোল ছিল।

ফুল মালা শ্বশুর নূরুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি জানার পর বাড়ীতে তাকে দড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধারের পর মাথায় ও হাতপায়ে পানি ঢালা হয়। এ সময় হাসপাতালে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলে একজন প্রতিবেশি ছেলেবউয়ের হাত নেড়েচেড়ে দেখে সে মারা গেছে এমন কথা বলায় আর হাসপাতালে না নিয়ে দাফন-কাফনের জন্য গোসল করে রাখা হয়।

স্বামী নূরুন নবী বলেন, সকাল ৬ টায় বাড়ী থেকে বের হয়ে ইটভাঙ্গার কাজে চলে যান। কি কারণে সে আত্মহত্যা করেছে তার কিছুই বলতে পারছেন না।

ফুলবাড়ী থানার পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) মাহমুদুল হাসান বলেন, মরহেদ ময়না তদন্তের জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না।

আফরোজ জাহান সেতু, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি