প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করলো বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এয়ার উইং। রোববার (৮ নভেম্বর) বেলা সোয়া ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে বিজিবি এয়ার উইংয়ের জন্য কেনা হেলিকপ্টার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী বিজিবি হেলিকপ্টার দুটি ব্যবহার করা হবে। দেশের সীমান্ত পথে মাদকদ্রব্যের অনুপ্রবেশ বন্ধে হেলিকপ্টার দুটি ব্যবহৃত হবে, যা বিজিবির অপারেশন ও লজিস্টিক সাপোর্টের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, পরিপূর্ণ ত্রিমাত্রিক আধুনিক বর্ডার গার্ড গঠনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় ২০১৬ সালে বিজিবি এয়ার উইং তৈরি করা হয়। ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর দুইটি এমআই-১৭১ই হেলিকপ্টার কেনার জন্য রাশিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিজিবির চুক্তি হয়। চলতি বছরের গত ১৮ ও ২৩ জানুয়ারি হেলিকপ্টার দুটি বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। বিজিবির দুইজন বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্সনায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ এবং ল্যান্সনায়েক মুন্সী আব্দুর রউফের নামে হেলিকপ্টার দুটির নামকরণ করা হয়। রাশিয়া থেকে আগত উড্ডয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রশিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে বিজিবির প্রশিক্ষণার্থীদের হাতেকলমে প্রশিক্ষণের পর গত ৪ মে থেকে হেলিকপ্টার দুটি অপারেশনাল হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

সক্ষমতার দিক দিয়ে এমআই-১৭১ই হেলিকপ্টারের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার। এটি সর্বোচ্চ ছয় হাজার মিটার উচ্চতায় উড্ডয়ন করতে পারে। একসাথে মোট ২৬ জন যাত্রী পরিবহন করতে পারে। সর্বোচ্চ পরিবহন ক্ষমতা ৩০০০ কেজি, রোগী পরিবহন ক্ষমতা ১২ জন। অত্যাধুনিক অটোপাইলট সিস্টেমে পরিচালিত সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই হেলিকপ্টারটি।

এছাড়া আর্মড পারসোনাল ক্যারিয়ার (এপিসি) ও রায়ট কন্ট্রোল ভেহিক্যালের (আরসিভি) সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার, যাত্রী পরিবহন করতে পারে ১২ জন, জ্বালানি ট্যাংক ২৫৭ লিটার, রয়েছে ব্যালাস্টিক প্রোটেকশন, ব্লাস্ট প্রোটেকশন। গ্রেডিয়েন্ট ৬০ শতাংশ, ফোর হুইল ড্রাইভ। এছাড়া রয়েছে নাইট ভিশন হাইস্পিড ক্যামেরা।

উল্লেখ্য, পঞ্চাশের দশকে বিজিবি (তৎকালীন ইপিআর) সদস্যদের ব্যবহারের জন্য ইতালি থেকে একটি পিয়াজ্জিও পি-১৩৬ উভচর বিমান কেনা হয়। বিমানটি সবশেষ ১৯৬৮ সালে আকাশে ওড়ে। দীর্ঘদিন বিকল অবস্থায় পড়ে থাকার পর ১৯৭৮ সালে এটিকে তৎকালীন বিডিআর সদরদপ্তর পিলখানায় স্থানান্তর করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের পর বিজিবির (তৎকালীন বিডিআর) বিভিন্ন জরুরি কাজে ব্যবহারের জন্য ১৯৮১ সালে একটি বেল ২১২ হেলিকপ্টার ক্রয় করা হয়। বর্তমানে হেলিকপ্টারটি বাংলাদেশ বিমান বাহিনী দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।