সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করে রায়হান আহমদকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত, পুলিশের সাময়িক বরখাস্তকৃত উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে সিলেটের কানাইঘাট সীমান্তের ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের দনা বস্তির খাসিয়ারা তাকে আটক করে। আজ সোমবার ভারতীয় খাসিয়ারা আকবরকে বাংলাদেশিদের কাছে হস্তান্তর করলে সেখান থেকে দুপুর ১টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

কানাইঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) স্বপন চন্দ্র সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসআই আকবরকে আটকের খবর পেয়ে সিলেট জেলা পুলিশ ও কানাইঘাট থানা পুলিশ এসআই আকবরকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে সীমান্তবর্তী কানাইঘাট দনা বিজিবি ক্যাম্পের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, তারা জানতে পেরেছেন এসআই আকবরকে ভারতের মেঘালয়ের সেখানকার দনা বস্তি থেকে আটক করেছেন খাসিয়ারা। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।

উল্লেখ্য, গত ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেটের কোতোয়ালি থানার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে রায়হান নামের এক যুবককে তুলে নিয়ে চাঁদার দাবিতে নির্যাতন করেন ফাঁড়ির সাময়িক বরখাস্ত ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া। পরের দিন সকালে তিনি মারা যান। নির্যাতনের সময় এক পুলিশের মুঠোফোন থেকে রায়হানের পরিবারের কাছে ফোন করে টাকা চাওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা সকালে ফাঁড়ি থেকে পরে হাসপাতালে গিয়ে রায়হানের লাশ শনাক্ত করেন।

ওই ঘটনার শুরুতে ওই ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা ছিনতাইকারী সন্দেহে নগরের কাস্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হয়েছেন বলে প্রচার চালায়। কিন্তু গণপিটুনির স্থান হিসেবে যেখানকার কথা বলেছিল পুলিশ, সেখানে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের স্থাপন করা ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় এমন কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি। এতে সন্দেহ হয় পুলিশের নির্যাতনের প্রতি। পরদিন পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার।

সেদিনই ফাঁড়ির ইনচার্জ ও উপপরিদর্শক আকবর হোসেন ভুঁইয়া, কনস্টেবল হারুনুর রশীদ, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাশ এবং কনস্টেবল তৌহিদ মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত এবং এএসআই আশেক আলী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজীব হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়।গত ১৯ অক্টোবর ওই ঘটনায় সিলেট আদালতে সাক্ষ্যমূলক জবানবন্দি দেন ফাঁড়ির তিন কনস্টেবল। ২০ অক্টোবর বরখাস্তকৃত কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাশকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। এ মামলায় গত ২৩ অক্টোবর কনস্টেবল হারুনুর রশীদকে গ্রেপ্তার করা হয়।