“স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক” স্লোগানটি বুকে-পিঠে ধারণ করে তৎকালীন স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে শহীদ হয়েছিলেন অকুতোভয় এক মানুষ যার নাম নূর হোসেন। সেই থেকে তিনি যেন গণতন্ত্রের আরেক নাম, গণতন্ত্রের কিংবদন্তী বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।

মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ’র আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আজকের বাস্তবতায় বেঁচে থাকলে হয়তো নূর হোসেন আরও হাজারো অসচ্ছল পরিবারের তরুণের মতো ধুঁকে ধুঁকে মরতেন। মরে গিয়ে তিনি অমর হলেন। তিনি নিজের জীবন উৎসর্গের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। কিন্তু প্রশ্ন একটা থেকেই গেল। স্বৈরাচারের কি নিপাত হয়েছে ? গণতন্ত্র কি মুক্তি পেয়েছে ?

ন্যাপ মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্র ও সাধারণ মানুষের মুক্তির যে বাসনা নিয়ে নূর হোসেন আত্মোৎসর্গ করেছিলেন, তা এখন আর জনমনে ও রাজনীতিতে খুব একটা ঝড় তুলতে পারছে না। বিশেষ দিনটি সামনে নিয়ে তাই নূর হোসেনকে স্মরণ করার পাশাপাশি বর্তমানে চলমান গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে যেকোনো ধরনের অসাংবিধানিক শাসনব্যবস্থাকে ঘৃণা করতে হবে। তাহলেই নূর হোসেনসহ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সব শহীদের আত্মদান সার্থক হবে।

বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া’র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ সভাপতি এম এ জলিল, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, সোনার বাংলা পার্টি সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হারুন-অর-রশিদ, বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনেম, জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন সমন্বয়ক কৃষক মো. মহসিন ভুইয়া, ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, যুগ্ম মহাসচিব এহসানুল হক জসীম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, মহানগর সভাপতি মো. শহীদুননবী ডাবলু প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, এ দেশে রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রাম নিত্যদিনের বিষয়। এখানে প্রতিনিয়ত স্লোগান তৈরি হয়। কাব্যিক ব্যঞ্জনা থাকে অনেক স্লোগানে। সেগুলো টিকে যায়, কালোত্তীর্ণ হয়। যেমন ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’। কিংবা ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’। এসব স্লোগান প্রথম কে কবে দিয়েছিলেন, তা জানা যায় না। আমাদের দেশের রাজনীতির অঙ্গনে স্বতঃস্ফূর্ততা একটি অনুষঙ্গ হিসেবে এসেছে বারবার। তবে নূর হোসেন বুকে-পিঠে যে স্লোগান ধারণ করেছিলেন, তার কাব্যময়তা অসাধারণ সুন্দর। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে গূঢ় রাজনৈতিক দর্শন।