মাদারীপুর জেলার উত্তর মহিষের চর লঞ্চঘাট এলাকায় নদীতে সেতু না থাকায় নৌকাই তাদের একমাত্র ভরসা। নদীর ওপারে ছয়টি গ্রামে রয়েছে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষের বস-বাস,বিভিন্ন প্রয়োজনে তারা প্রতিনিয়ত নদীটি পারাপার হন। কিন্তু নদীতে সেতু না থাকায় নৌকাই তাদের একমাত্র ভরসা। নৌকা ডুবির মতো বড় ধরনের দুর্ঘটনাও একাধিকবার ঘটেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গ্রামবাসীসহ প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন চলাচল করে। তাই শিক্ষার্থীদের আসতে ও বাড়ি ফিরতে হয় নৌকায় করে।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের জন্য নদীটি পাড়ি দিয়ে মাদারীপুর আসতে হয়। এসব এলাকার মানুষ তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা প্রভৃতি যানবাহনে যাতায়াত করে। কিন্তু সেতু না থাকায় নদী পার হওয়ার সময় তাদেরকে বিপাকে পড়তে হয়। এছাড়া কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারে নেওয়ার ক্ষেত্রে দুর্ভোগের মুখে পড়েন।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় আড়িয়াল খাঁ নদীতে কোনো সেতু না থাকায় তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। এতে শিক্ষা, চিকিৎসা ও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দিকে পিছিয়ে রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। নৌকা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন শিশু, নারী, পুরুষ ও শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৫/৬ হাজার মানুষ চলাচল করছে। স্বাধীনতার কয়েক যুগ পেরিয়ে গেলেও আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর একটি সেতু নির্মিত না হওয়ায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে মহিষেরচর, জাফ্রাবাদ, বাহেরচর কাতলা, জাজিরা, তালুøক (মোল্লা কান্দি), আংগুুল কাটা,ছিলারচর সহ আস-পাশের প্রায় ৬ থেকে ৭ টি গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা। উত্তর মহিষেরচর ৭নং ওয়ার্ডের লঞ্চঘাট এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর একটি সেতু নির্মিত হলে দুই পাড়ের মানুষের কষ্ট যেমন শেষ হতো তেমনই হাজারো মানুষের মধ্যে একটি মেলবন্ধন তৈরি হতো।

পাঁচখোলা ইউনিয়নের সাবেক ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ পেদা বলেন, মাদারীপুর লঞ্চঘাট এলাকা দিয়ে নদী পারাপারে সারা বছর জুড়ে নৌকাই একমাত্র ভরসা। প্রতিদিনই শিক্ষার্থীরা ও সাধারণ মানুষ ৫ টাকার বিনিময়ে নদী পারাপার হয়। সেতু না থাকায় মালামাল নিয়ে বাজারে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে খুবই কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়। এতে করে যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে হচ্ছে তাছাড়াও সময় ও ব্যয় হচ্ছে। এই ব্রিজটা হলে আমাদের সময় অনেকটা বেচে যাবে। কোনো সেতু না থাকায় পাঁচখোলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের লোকজন সকল মৌসুমেই দুর্ভোগ পোহাতে হয় এই এলাকার মানুষকে । এই ব্রিজটা কাঙ্খিত সপ্ন সবার, আমরা এর বাস্তবায়ন চাই।
পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান,মোঃ নজরুল ইসলাম আক্তার হাওলাদার বলেন,পাঁচখোলা ইউনিয়নের মধ্যে ৭নং ওয়ার্ড লঞ্চ ঘাটের এপার এবং ওপার। ৭নং ওয়ার্ডের লোকজনের একাধিক বার চাহিদা ছিল যে আমাদের উত্তর মহিষেরচর লঞ্চঘাট সোজা আমরা একটা ব্রিজ চাই । যেখানে বর্তমানে খেয়া আছে এই খেয়া দিয়ে ৫/৭টি ইউনিয়নের লোকজন যাতায়াত করে। ব্যাস্ততম একটি রাস্তা এটা। কিন্তু এখানে খেয়ার বিকল্প কোন ব্যাবস্থা নেই। ওপাড়ে যত ছাত্র-ছাত্রী আছে তারা পড়াশুনার জন্য শহরে আসে এবং প্রত্যেকটা লোক হেটে এই খেয়া পার হয়ে আসতে হয়। বিশেষ করে বর্ষায় নদীতে প্রবল ¯্রােত থাকে। এতে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হতে হয়। এখানে সেতু নির্মাণ হলে এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মজীবী মানুষের ভোগান্তির শেষ হবে। এই ব্রিজটা অনেক আগেই বিশেষ প্রয়োজন ছিল। এবিষয়ে মাননীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব শাজাহান খান এমপি মহোদয় কে একাধিক বার বলা হয়েছে তিনিও অনেক আন্তরিক। সর্বস্থরের জনগনের প্রানের দাবী আমরা এই ব্রিজটা চাই।

সাবরীন জেরীন,মাদারীপুর।