গাজীপুরে মুক্তিপণের দাবীতে অপহরণের ৩দিন পর শনিবার এক ভ্যান চালককে উদ্ধার করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় এক সাংবাদিক ও তার দু’সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কোনাবাড়ি থানাধীন আমবাগ উত্তর পাড়া এলাকার আলাল মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া (২৮), টাঙ্গাইল জেলা সদর থানার বীর পুষিয়া উত্তরপাড়া এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে রবিউল ইসলাম রুবেল (৩২) এবং ঢাকার উত্তর খান ময়নারটেক এলাকার আরিফ মিয়ার ছেলে আইপি টিভি মুক্তমন এর কথিত সাংবাদিক আবিদ রাসেল (৩৬)।

জিএমপি’র উপ কমিশনার (গোয়েন্দা) জাকির হাসান জানান, রাজবাড়ি জেলার পাংশা থানার দুধেশ্বর গ্রামের মৃত সুলতান মন্ডলের ছেলে সালাম মন্ডল (৩৮) টাঙ্গাইলের মধূপুর থানার বেতবাড়ি এলাকায় থেকে রিক্সাভ্যান চালান। গত বুধবার সালাম গাজীপুরের মৌচাক এলাকায় তার বড় ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে আসেন। তিনি কেনাকাটার জন্য বুধবার রাত ৯টার দিকে কোনাবাড়ীর আমবাগ রোডের রনু সুপার মার্কেটের সামনে যান। এসময় কথিত সাংবাদিক আবিদ রাসেল, রুবেল মিয়া ও রবিউলসহ কয়েক যুবক সেখান থেকে সালামকে অপহরণ করে স্থানীয় আমবাগ এলাকায় অপহরণকারী রুবেলের বাড়িতে নিয়ে আটক করে। অপহরণকারীরা তাকে বেধড়ক মারধর করে। পরে খুন করে লাশ গুম করার হুমকি দিয়ে অপহৃতের পরিবারের কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে অপহরণকারীরা। তারা অপহৃতের পরিবারের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা করে দু’দফায় মোট ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এদিকে বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করে অপহৃতের সন্ধান না পেয়ে জিএমপি’র কোনাবাড়ি থানায় অভিযোগ করেন তার স্বজনরা।

তিনি জানান, অপহৃতকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ বিভিন্নস্থানে অভিযান চালায়। একপর্যায়ে অপহরণের ৩দিন পর শনিবার সকালে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কোনাবাড়ি থানাধীন আমবাগ এলাকায় রবেলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অপহৃত সালাম মন্ডলকে উদ্ধার করে। এসময় অপহরণকারী দলের সদস্য কথিত সাংবাদিক আবিদ রাসেল, রুবেল মিয়া ও রবিউলকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারী দলের অন্যরা পালিয়ে যায়। অভিযানকালে অপহরনকারীদের কাছ থেকে মুক্তমন টিভির স্টিকার লাগানো একটি ক্যানন ক্যামেরা ও ক্যাবলসহ বুম, নির্যাতনের কাজে ব্যবহৃত লাঠি, হাতুড়ি, প্লাসসহ ৬টি মোবাইল ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, গ্রেফতারকৃতরা মুক্তিপণের দাবীতে অপহরণকারী ও দুষ্কৃতিকারী দলের সক্রিয় সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে তারা পরষ্পর যোগ সাজশে সাংবাদিক ও পুলিশ পরিচয়ে বিভিন্ন লোকজনকে আটক ও অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়সহ নানা অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীণ রয়েছে।