উচ্চ আদালত নির্দেশ দিলেও ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব থেকে ভ্যাট পাচ্ছে না বাংলাদেশ। তথ্যের চাহিদা পূরণে অনলাইনে সংবাদপত্র পড়তে গেলে কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্রাউজিংয়ে হরহামেশাই দেশীয় প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে। আবার অনলাইন ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবেও দেশীয় বিজ্ঞাপনের হার দিনদিন বাড়ছে। বেসিসের তথ্যমতে, ফেসবুক, গুগল, ইউটিউবে বিজ্ঞাপন বাবদ বছরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা যাচ্ছে। অথচ সরকার উল্লেখযোগ্য রাজস্ব পাচ্ছে না। এ অবস্থায় ফেসবুক-গুগল থেকে ভ্যাট আদায়ে এনবিআরকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আইনজীবিরা বলছেন, সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তি রয়েছে; এই চুক্তির আওতায় ফেসবুক-গুগল সিঙ্গাপুরে অফিস চালু করে বাংলাদেশে সেবা দিচ্ছে। এক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরে কর পরিশোধের অজুহাতে তারা বাংলাদেশকে কর দিচ্ছে না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাসুম বলেন, ওরা যদি সিঙ্গাপুরে ভ্যাট দিয়ে থাকে, তাহলে আমাদের এখানেও ভ্যাট দিতে হবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, ফেসবুক অরিজিনালি ইউএস (যুক্তরাষ্ট্র) ভিত্তিক কোম্পানি। যদি সিঙ্গাপুরিয়ান কোম্পানি হতো তাহলে আমরা ওই যুক্তিটা মানতে পারতাম। এইসব খোঁড়া যুক্তি আমার মনে হয় না যে গ্রহণযোগ্য। এদিকে, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন পদক্ষেপের কথা জানাতে পারেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

অন্যদিকে, দেশে বছরে প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকার কর ফাঁকি দিচ্ছে বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানি ও ব্যক্তি পর্যায়ের করদাতারা। কর ফাঁকির এ পরিমাণ মোট কর রাজস্বের সাড়ে ৩ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ের ৬২ শতাংশ ও শিক্ষা খাতে ব্যয়ের ১৪ শতাংশের সমান। এ পরিমাণ অর্থ চিকিৎসা খাতে নিয়োজিত প্রায় চার লাখ নার্সের বার্ষিক বেতনের সমতুল্য। ট্যাক্স জাস্টিস নেটওয়ার্ক (টিজেএন) নামে কর ফাঁকিবিরোধী একটি আন্তর্জাতিক ফোরামের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।