যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ফাইজার-বায়োএনটেকের কোভিড-১৯ টিকার প্রয়োগ শুরু করেছে। কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক ও সামরিক বাহিনীর সদস্যের সহায়তায় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা এ টিকাদান শুরু করেন। এ টিকা প্রয়োগ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরও একধাপ অগ্রগতি হলো বলে মনে করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে যুক্তরাজ্যের কনভেনট্রি শহরের সিটি হাসপাতালে করোনার টিকা প্রয়োগ শুরু হয়। টিকা দেয়ার প্রথম দিনটিকে ‘ভি-ডে’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম সারিতে আছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা, যাদের সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। টিকা পেতে বেশির ভাগ জনগণকে আগামী বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

কনভেনট্রি শহরের সিটি হাসপাতালে স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৩১ মিনিটে মার্গারেট কেনান নামে ৯০ বছর বয়সী এক নারীর ওপর ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা প্রয়োগ করা হয়। হাসপাতালের একজন নার্স তাকে টিকাটি দেন। বয়স্ক হিসেবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকাটি গ্রহণের সুযোগ পান তিনি। আগামী সপ্তাহে মার্গারেট কেনান ৯১ বছরে পা রাখবেন। জন্মদিনের ঠিক আগে করোনার টিকা পেয়ে তিনি বেশ উৎফুল্ল। কেনান বলেন, টিকা নিতে পেরে তিনি নিজেকে খুবই ভাগ্যবান মনে করছেন। তিনি বলেন, ‘এটা জন্মদিনের সেরা আগাম উপহার, আমার পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে আগামী বছরটা আমি ভালোভাবে কাটাতে পারব।’

প্রথম ৮০ হাজার ডোজ টিকা ৮০ বছরের বেশি প্রবীণ ও কেয়ার হোমের কর্মীরা পাবেন। এর আগে, ২ ডিসেম্বর মার্কিন ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও জার্মানির বায়োএনটেকের তৈরি করোনার টিকা জরুরিভাবে ব্যবহারের অনুমতি দেয় যুক্তরাজ্য। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের এ অনুমোদন করোনা মহামারি প্রতিরোধে বড় ধরনের অগ্রগতি। ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এমএইচআরএ বলছে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ৯৫ শতাংশ সক্ষম টিকাটি এখন ব্যবহারের জন্য নিরাপদ।

এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নও পিছিয়ে নেই। ফাইজারের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মডার্নাও তৈরি করেছে করোনার টিকা। টিকা অনুমোদনের পর ফাইজারের সিইও আলবার্ট এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী উচ্চ মান সম্পন্ন এ টিকা জরুরিভাবে, নিরাপত্তার সাথে সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

যুক্তরাজ্যের সরকারি তথ্য মতে, এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৬০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। শীতের সময়টা নিয়ম মেনে চললে আগামী ইস্টার অর্থাৎ এপ্রিল নাগাদ কড়াকড়ি বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া সম্ভব হতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সরকার।