প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার আঞ্চলিক উন্নয়ন ও সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে পুনরায় বলেছেন, বাংলাদেশ ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ নীতি অনুসরণ করে। ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরকারি বাসভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি বলেন, ‘আমি আঞ্চলিক উন্নয়ন ও সহযোগিতায় বিশ্বাস করি। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, তিনি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ নীতি অনুসরণ করেন।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার সাংবাদিকদের এ বিষয়ে অবহিত করেন। এ ছাড়া এদিন গণভবনে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাতালি শুয়ার্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জং কিউন সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধের পরে দেশ গঠনে ভারতের অবদানের কথা স্মরণ করেন।

সাক্ষাৎকালে ভারতীয় হাইকমিশনার ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া আঞ্চলিক কার্যালয় (এসইএআরও) বিষয়ে বাংলাদেশের প্রার্থিতার প্রতি ভারত সরকারের সমর্থনের কথা জানান।

ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে বেক্সিমকোর কাছে কোভিড-১৯ টিকার তিন কোটি ডোজ সরবরাহের চলমান প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে দোরাইস্বামী জানান, টিকার কার্যকর সরবরাহের জন্য বাংলাদেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে তারা আগ্রহী। তিনি বাংলাদেশের খাদ্য ও কৃষি খাতে আরো ভারতীয় বিনিয়োগ আনার প্রস্তাব দেন। ভারতীয় হাইকমিশনার ব্যবসায়ী পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ানো নিয়ে কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় ভারত অংশীদার হতে আগ্রহী বলে উল্লেখ করেন দোরাইস্বামী।

আগামী ১৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মাঝে হতে যাওয়া ভার্চুয়াল সম্মেলনে চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেলপথসহ আরো কিছু প্রকল্প উদ্বোধন করা হবে। মহামারিতে বাংলাদেশিদের ভিসা পাওয়া নিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার জানান, বর্তমানে ভিসার ৯০ শতাংশ ক্যাটাগরি চালু রয়েছে এবং বাকিগুলোও মহামারি পরিস্থিতি বিবেচনা করে খুলে দেওয়া হবে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বাংলাদেশ-ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে আসন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন ভারতীয় হাইকমিশনার। তিনি আরো জানান যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ সব ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সব বাংলাদেশির জন্য শুভ কামনা পোষণ করেন।

দোরাইস্বামী সাক্ষাৎ দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ধন্যবাদ দেন এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে শুভেচ্ছা জানান। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।