লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার উত্তর সিন্দুর্না এলাকায় ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় এর বরাদ্দকৃত ২৯ লক্ষ টাকার ব্রিজ নির্মাণের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ফলে ব্রিজের ঢাকাই বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী। তবে ঠিকাদার দাবী উপজেলা পি,আই,ও অফিসের নির্দেশ মোতাবেক কাজ করা হয়েছে।
বুধবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে ঐ উপজেলার উত্তর সিন্দুর্না এলাকায় সাবেক চেয়ারম্যান খতিব উদ্দিনের বাড়ির পশ্চিমে ব্রিজের এ ঢালাই বন্ধ করে দেয় এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার উত্তর সিন্দুর্না এলাকায় সাবেক চেয়ারম্যান খতিব উদ্দিনের বাড়ির পশ্চিমে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের ২৯ লক্ষ টাকা ব্যায়ে একটি ব্রিজ নির্মাণের বরাদ্দ দেয়া হয়। ব্রিজ নির্মাণের শুরু থেকে দরপত্রের কোন শিডিউল মোতাবেক কাজ করেনি ঠিকাদার। ব্রিজ নির্মাণের ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের নষ্ট সিমেন্ট, নোকাল বালু, পুরাতন রড ও পুরাতন ব্রিজের নষ্ট খোয়া। ব্রিজের উচ্চতা শিডিউলে ১৮ ফিট থাকলেও তা করা হয়েছে ১৪ ফিট। ছাদে রডের পরিমানও দেয়া হয়েছে কম। ফলে বুধবার সকালে ঠিকাদার ব্রিজের ছাদ ঢালাই দেয়ার চেষ্টা করলে তা বন্ধ করে দেয় এলাকাবাসী। ব্রিজের উচ্চতা ৪ ফিট কম করায় বন্যায় সময় ব্রিজের সামনে কচুরিপানা জমাট বাধবে। ফলে বন্যার পানির স্রোতে ব্রিজের দুই পাশের রাস্তার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এলাকাবাসী আরও বলেন, ব্রিজের কাজ বুঝে নেয়ার দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পি,আই,ও) ফেরদৌস আহমেদ থাকলেও মোটা অংকের টাকা উৎকোচের বিনিময়ে তিনি সব অনিয়ম ও দুর্নীতি দেখেও না দেখার ভান করছে। ফলে সরকারি সিডিউল মোতাবেক এখানে কোন কাজ করা হয়নি।

তাই এলাকাবাসী সরকারি সিডিউল মোতাবেক ব্রিজের কাজ না করার পিছনে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাতীবান্ধা, জেলা প্রশাসক লালমনিরহাট ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

ব্রিজের নির্মাণে প্রকৃত ঠিকাদার লালমনিরহাটের আব্দুল হাকিম হলেও তা ৮ লক্ষ টাকায় কিনে নিয়ে কাজ করছে সিন্দুর্না ইউনিয়নের সেলিম হোসেন নামে এক যুবক।

তবে ঐ ব্রিজ নির্মাণের সাইড ঠিকাদার সেলিম হোসেন বলেন, কাজে কোন অনিয়ম করা হয়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার নিয়মিত তদারকিতে ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে।
ব্রিজের উচ্চতা ৪ ফিট কমানোর বিষয়ে জানতে চাইলে ঐ ঠিকাদার বলেন, গ্রামীণ রাস্তাটি নিচু হওয়া এলাকাবাসী এর আগে ব্রিজটি নিচু করার জন্য বারবার বলেছিলো। সেই আলোকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দেখানো মাপে ব্রিজের উচ্চতা একটু কমানো হয়েছে। তবে ঐ এলাকার দুই একজন তার কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা আদায় করতে না পেরে ব্রিজের ঢালাই বন্ধ করে দেয়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পি,আই,ও) (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ব্রিজের উচ্চতা নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছে। ফলে এলাকাবাসী কাজ বন্ধ করে দেয়। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ,এন,ও) সামিউল আমিন বলেন, এবিষয়ে কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।