দেশের মাটিতে সবার সমান অধিকার থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার বিকেলে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ২৩, বঙ্গবন্ধু এভেনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।

দেশবাসীকে মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় দৃঢ় থাকার আহ্বান পুণর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এই দেশের মাটিতে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই সমান অধিকার নিয়েই বসবাস করবে। মনে রাখতে হবে- সকলে এক হয়ে মুক্তিযুদ্ধে রক্ত ঢেলে দিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছে। যার যা ধর্ম ধর্ম তা পালনের স্বাধীনতা সকলেরই থাকবে। আমরা সেই চেতনায় বিশ্বাস করি এবং ইসলাম আমাদের সে শিক্ষাই দিয়ে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘আমি একটা কথাই বলবো এই মাটিতে হিন্দু, মুসলমান, খ্রীস্টান, বৌদ্ধ-সকল ধর্মের মানুষের বসবাস থাকবে অর্থাৎ আমরা মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ বলে অন্য ধর্মকে অবহেলার চোখে দেখবো তা নয়। হযরত মুহম্মদ (সা.) ও আমাদের সে শিক্ষাই দিয়ে গেছেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সকলকে আমি এটুকুই বলবো সকলকে যেকোন পরিস্থিতি সহনশীলতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। কে কি বললো না বললো তা শোনার থেকে কতটুকু আমরা দেশের জন্য করতে পারলাম সেটাই আমাদের চিন্তায় থাকবে। তাহলেই আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। সঠিক কাজ করতে পারবো।’

তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের মহান বিজয়ের প্রাক্কালে আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। যাতে বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জ্ঞানী, গুণী কেউ না থাকে। ঠিক যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বিশেষ করে ৮ ও ৯ ডিসেম্বর ব্যাপকভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যা চলে এবং আমরা ১৪ ডিসেম্বর দিনটিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করি। সে সময়ে অনেকে তাদের পরিজনের লাশও পাননি। আবার ’৭৫ এ জাতির পিতার সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগসহ সংগঠনের বহু নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে, যাদের লাশ ও পাওয়া যায়নি। এই নির্যাতন তো চলছে। অগ্নিসন্ত্রাস থেকে শুরু করে নানাভাবে, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস-সবকিছু আমরা দেখেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে কথা ওঠানোর চেষ্টা হয়েছে। বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষ সমান সুযোগ নিয়ে চলবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে নামটি ৭৫ এর পরে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল সেখানে আজ ইউনেস্কো ঘোষণা দিয়েছে- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে অর্থনীতির ক্ষেত্রে যারা অবদান রাখতে সমর্থ হবেন তাদের আন্তর্জাতিক পুরস্কার দেওয়া হবে। এটা মুজিব শতবর্ষে সমগ্র বাঙালি জাতির জন্য বড় একটি উপহার বলে আমি মনে করি।’

আলোচনা সভায় প্রারম্ভিক বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় আরও বক্তব্য দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, সভাপতি মন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, কৃষিমন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আব্দুর রহমান প্রমুখ।