যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন দ্রুত ছড়ানোর প্রেক্ষাপটে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের আকাশপথে যোগাযোগ সাময়িক বন্ধ করতে বলেছে সংসদীয় কমিটি। ফ্লাইট বন্ধ না করা পর্যন্ত লন্ডন থেকে দেশে ফেরা যাত্রীদের ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন পালনেরও সুপারিশ করা হয়।

বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সপ্তম বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। এসময় বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ব্রিটেনের দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্বে একটি নতুন ধরনের এবং অধিক সংক্রামক করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এজন্য বাংলাদেশকে সতর্ক হতে বলেছে সংসদীয় কমিটি। তাই লন্ডনগামী সব ফ্লাইট বন্ধের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।

জানা গেছে, এসব ভাইরাসের কারণে জার্মানি, ইতালি, বেলজিয়াম, আয়ারল্যান্ড, তুরস্ক এবং কানাডাসহ বিশ্বের অন্তত ৪০টি দেশ এ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। ভারতও যুক্তরাজ্য থেকে আসা বিমানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

কিন্তু ফ্লাইট যেহেতু চলছে, আসার আশঙ্কাও থেকে যায়। এ কারণে আমরা বিমান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে সাময়িকভাবে ফ্লাইট বন্ধ করতে বলেছি। করোনাভাইরাস মহামারীর এক বছর পেরিয়ে আসার পর যুক্তরাজ্যে ভাইরাসটির নতুন একটি ধরন শনাক্ত হওয়ার পর বিভিন্ন দেশ দেশটির সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।

বাংলাদেশের মধ্যে এই দাবি উঠলেও সরকার এখনও লন্ডনের ফ্লাইট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে যুক্তরাজ্য থেকে আসা সবাইকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত সংসদের গণসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন জানান, অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস আনবে। আর কোভ্যাক্সের আওতায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে চার কোটি নব্বই লাখ ডোজ টিকা পাওয়া যাবে বলে কমিটিকে জানায় স্বাস্থ মন্ত্রণালয়।

কমিটির সদস্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী জাহিদ মালেক, মুহিবুর রহমান মানিক, মো. আব্দুল আজিজ, সৈয়দা জাকিয়া নুর, রাহ্গির আলমাহি এরশাদ এবং মো. আমিরুল আলম মিলন বৈঠকে অংশ নেন। এছাড়া বৈঠকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি, কোভিড-১৯ অ্যাডভাইজারি কমিটির সভাপতি, স্বাচিপের মহাসচিব, বিভিন্ন সংস্থা প্রধানরাসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।