অনলাইনে নিষিদ্ধ ভার্চুয়াল মুদ্রা ‘বিট কয়েন’ (ইরঃ ঈড়রহ) ক্রয়-বিক্রয়সহ মানি লন্ডারিং ও ক্রেডিট কার্ড হ্যাকিং’র মাধ্যমে প্রতারণার মাস্টারমাইন্ডকে বুধবার গাজীপুর থেকে আটক করেছে র‌্যাব-১’র সদস্যরা। এসময় তার কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, কম্পিউটার, মোবাইল, গাড়ি ক্রয়-বিক্রয়ের কাগজ ও বিভিন্ন সনদসহ নানা সামগ্রী জব্দ করা হয়।

আটককৃতের নাম মোঃ রায়হান হোসেন ওরফে রায়হান (২৯)। সে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার নফিপুর দক্ষিণপাড়া এলাকার আতর আলীর ছেলে।

র‌্যাব-১’র উপ অধিনায়ক মেজর গাজী আশিকুর রহমান জানান, বাংলাদেশে অনলাইনে নিষিদ্ধ ভার্চুয়াল মুদ্রা ‘বিট কয়েন’ (ইরঃঈড়রহ) ক্রয় বিক্রয় এবং এর মাধ্যমে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করে আসছে কতিপয় ব্যক্তি। এ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা নজরদারীর মাধ্যমে বিট কয়েন ক্রয়-বিক্রয় ও প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধ অর্থ উপার্জনকারী কতিপয় চক্রকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয় র‌্যাব-১’র সদস্যরা। এ কর্মকান্ডের মূল হোতা হিসেবে মোঃ রায়হান হোসেনকে চিহ্নিত করা হয়। সে অনলাইনে ভার্চুয়াল মুদ্রা বিট কয়েন এর মাধ্যমে সাধারণ লোকজনের টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারনাসহ মানি লন্ডারিং, ক্রেডিট কার্ড হ্যাকিং ও বিপুল অংকের নিষিদ্ধ অনলাইন মুদ্রা বিট কয়েন লেনদেন করে আসছিল। এর প্রেক্ষিতে বুধবার ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে রায়হানকে গাজীপুরের সফিপুর এলাকার বাসা থেকে আটক করে র‌্যাব-১’র সদস্যরা।

অভিযানকালে র‌্যাব সদস্যরা আটককৃতের কাছ থেকে নিজের নামে ১৯টি জাল জাতীয় পরিচয়পত্র, ২২টি সিমকার্ড, ২৫ ইউএস ডলারসহ নগদ ১,২৭৫ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকের ৪টি চেক বই, ৩টি মোবাইল ফোন, ১টি অডি গাড়ি ক্রয়-বিক্রয়ের সনদ, ৩টি ভুয়া চালান বই, ১টি করে কম্পিউটার, ক্যামেরা, রেকর্ডিং মাইক্রোফোন, হেড ফোন, রাউটার, ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট ও মডেম জব্দ করা হয়।

আটককৃতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ২০০৬ সালে ব্যক্তিগত আগ্রহে কম্পিউটারের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে রায়হান হোসেন। প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার পর সে ২০১১ সাল হতে ওয়েব ডেভেলপিং, গ্রাফিক ডিজাইনিং, ইউটিউব চ্যানেল ইত্যাদি পরিচালনা করে আসছিল। সে গত জুন মাস হতে পাকিস্তানি নাগরিক জনৈক সাইদ (২২) এর সহায়তায় নিষিদ্ধ বিট কয়েন নামক ভার্চুয়াল মুদ্রার মাধ্যমে দেশী বিদেশী বিভিন্ন গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারনা করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ হাতিয়েছে। প্রতারক রায়হান এম.আর.এইচ. সফট ওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানীর পরিচয় দিয়ে এবং স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার করে নামে-বেনামে দেশী এবং বিদেশী একাধিক অনলাইন ব্যাংক হিসাব তদারকি করে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার ইউএস ডলার হাতিয়ে নিয়েছে।

সে পাকিস্তান, নাইজেরিয়া এবং রাশিয়ান স্মাগলার, ক্রেডিট কার্ড হ্যাকার ও নিষিদ্ধ বিট কয়েন (ভার্চুয়াল মুদ্রা) এর মাধ্যমে অবৈধ পাচারকারীদের সঙ্গে যোগসাজশে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারনা ও জালিয়াতি করে আসছিল। সে ক্রেডিট কার্ড হ্যাকিং এর মাধ্যমে ভার্চুয়াল মুদ্রা বিট কয়েন ক্রয় করে। সে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে গত জুন মাস হতে তার বিভিন্ন দেশের সহযোগীদের সহায়তায় বিট কয়েন (ভার্চুয়াল মুদ্রা) এর মাধ্যমে প্রতারনা ও জালিয়াতি করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থের মালিক হয়। রায়হান প্রায় ৬ মাস আগে অবৈধ উপার্জিত ১ কোটি ৭ লাখ টাকায় ঢাকার একটি শোরুম হতে একটি অডি (অটউও) গাড়ী ক্রয় করে। সে জাল পরিচয়পত্র ও ডাক বিভাগের চালান বই তৈরী করে প্রতারণা ও জালিয়াতির কাজে ব্যবহার করতো।