পৃথিবীতে আজকের মানুষ একবারে আসেনি। আদিম মানবের বিভিন্ন প্রজাতি পেরিয়ে তবে আজকের হোমো স্যাপিয়েন্সদের আগমন। আর এই যাত্রাপথে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিয়ান্ডারথাল মানুষরা। কিন্তু কেন তারা আচমকাই হারিয়ে গিয়েছিলো, এই নিয়ে নানা মত রয়েছে। তবে সম্প্রতি একেবারে ভিন্ন এক দাবি করেছেন গবেষকরা। তাদের দাবি, আজ থেকে ৪২ হাজার বছর আগে পৃথিবীর মেরুদ্বয়ের প্রান্ত বদলের কারণেই অতিকায় স্তন্যপায়ী প্রজাতি মেগাফনা ও নিয়ান্ডারথাল মানবরা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিলো।

‘সায়েন্স’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্র। গবেষক দলের অন্যতম নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ক্রিস টার্নের দাবি, গবেষণায় দেখা গিয়েছে সেই সময় মেরু বদলের কারণে চৌম্বক ক্ষেত্র দুর্বল হয়ে যায়। ফলে আবহাওয়ায় প্রচুর পরিমাণে কার্বণ-১৪ বেড়ে যায়। এর ধাক্কাতেই মারা যায় নিয়ান্ডারথালরা।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, ২ থেকে ৩ লক্ষ বছর অন্তর এমন ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের শক্তি কমছে তাতে ফের পৃথিবীর মেরুদ্বয়ের প্রান্তবদলের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না গবেষকরা।

প্রসঙ্গত, পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র তেজস্ক্রিয়তার হাত থেকে এই গ্রহকে রক্ষা করে। মানুষ ও বাকি জীবজগৎ এই গ্রহে টিকে রয়েছে চৌম্বক ক্ষেত্রের জন্যই। এর দৌলতেই মহাজাগতিক রশ্মি, ক্ষতিকারণ তেজস্ক্রিয়তার কবল থেকে রেহাই মেলে।

মানুষের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে নিয়ান্ডারথালদের সম্পর্কেই সব থেকে বেশি তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ১৮৫৬ সালে জার্মানির নিয়ান্ডারথাল উপত্যকা থেকে পাওয়া এক ফসিলের নাম জায়গার নামে রাখা হয় নিয়ান্ডারথাল মানুষ। নিয়ান্ডারথালদের সঙ্গে সাধারণ মানুষদের সাদৃশ্য রয়েছে অনেকটাই।

জেনেটিক গবেষণা থেকে জানা গেছে, আমাগের ডিএনএ’র সঙ্গে অনেকটাই মিল রয়েছে তাদের। কিন্তু ইউরোপ ও এশিয়ায় বসবাসকারী নিয়ান্ডারথালরা কেন আজ থেকে প্রায় ৪০ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়েছিলো তা আজও স্পষ্ট নয়। নানা মত রয়েছে। এমনকী, হোমো স্যাপিয়েন্সদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ঠিকতে না পেরে হারিয়ে যাওয়ার থিয়োরিও রয়েছে। কিন্তু এবার সম্পূর্ণ এক ভিন্ন দাবি করতে দেখা গেলো বিজ্ঞানীদের।